Tuesday 22 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আরেফিন সিদ্দিক সবসময় মানুষকে ফ্রিডম দিতেন’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:০১ | আপডেট: ৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৯

ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ‘আরেফিন সিদ্দিক সবসময় মানুষকে ফ্রিডম দিতেন এবং নিজের মতো করে কাজ করার সুযোগ দিতেন। নিজের মতকে কখনো কারও ওপর চাপিয়ে দিতেন না। আরেফিন স্যারের সঙ্গে যখনই আমাদের আলোচনা হতো, তখনই তিনি একটা কথা বলতেন- রাজনীতি চর্চার মধ্যে থেকেও প্রফেশনালিজম, ব্যক্তিসত্ত্বা ও সততা অক্ষুণ্ন রাখতে হয়। তবেই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার নেতিবাচক দিক থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।’— এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন ঢাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৯ এপ্রিল) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককের মৃত্যুতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পক্ষ থেকে একটা স্বরণসভার আয়োজন করা হয়। ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।

এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব পালন করেছি। আমি তখন যুগ্ম-সম্পাদক ছিলাম। আমাদের মাঝে প্রচণ্ড বৈরিতা তৈরি হয়েছিল, কিন্তু তা কখনো তিক্ততার পর্যায়ে যায়নি। আমাদের মধ্যে মতের মিল ছিল না। উনারা একভাবে চিন্তা করতেন, আমরা ভিন্নভাবে চিন্তা করতাম। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ছিল এক। এরপর আরেফিন স্যার উপাচার্য হলেন। খুব বেশি আমার সঙ্গে উনার দেখা হত না। আমি উপাচার্যের অফিসেও যেতাম না। তবে আমাদের বাইরে অনেক কাজে দেখা হতো। তিনি সবসময় দেখা হলে মৃদু হেসে কথা বলতেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার জন্য উনার সমস্যা হতে পারে, তখন উপাচার্যকে ফোন করলাম আর বললাম যে, আমাকে যদি কখনো চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন, তাহলে আপনার কিছু করার দরকার নেই; আমাকে শুধু একটা চিঠি লিখবেন। আমি কিছুই করব না। আমি আমার অফিস ও বাসা ছেড়ে দিয়ে বেরিয়ে যাব। কিন্তু আপনি আমাকে কোনো অপমানজনক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলবেন না। সারপ্রাইজিংলি কয়েকদিন পর দেখলাম। তিনি আমাকে সিলেকশন কমিটির মেম্বার করলেন। এতে তিনি তার নিজের ফোল্ডের লোকদের কাছ থেকে অনেক ধরণের রেজিসটেন্সের শিকার হলেন। তারপরও তিনি একাজ করলেন। আমি ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ছয় বছর ও দায়িত্ব পালন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একদিন সিনেটে অধিবেশন হচ্ছে। আমরা তখন সিদ্ধান্ত নিলাম, সিনেট বয়কট করব। উনি হাসতে হাসতে বললেন আসেন, বয়কট করবেন কেন? একসঙ্গে কাজ করি। তখন আমি জানালাম, আপনি যেভাবে কাজ করছেন সেভাবে চলতে পারে না। পরে তিনি মৃদু একটা হাসি দিয়ে বললেন, আসেন একসঙ্গে করতে পারি কিনা দেখেন। তার পর কাজ করলাম একসঙ্গে। তার পরও আমাদের পথ ভিন্ন, মত ভিন্ন, একসঙ্গে হতে পারলাম না। এর পর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা কাজে আসব, তবে ডিনার করব না। ডিনার করব না বলে আমরা চলে আসলাম। পরে তিনি আমাদের খবর পাঠান। এর পর বলেন, রাগ কইরেন না, চলে আসেন। আমাদের সঙ্গে আরেফিন সিদ্দিকের সম্পর্কটা এরকম এই ছিল।’

বিজ্ঞাপন

ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীম রেজা ও সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তি হায়দারের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীসহ অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের পরিবারের সদস্যরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এআইএন/পিটিএম

অধ্যাপক মামুন আহমেদ। ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাবির উপ-উপাচার্য স্মরণসভা

বিজ্ঞাপন

রাশেদ-অহনার ‘ভাঙ্গা সংসার’
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২৭

আরো

সম্পর্কিত খবর