ফাঁকা ঢাকায় অটোরিকশার রাজত্ব, স্বস্তিতে ঘুরতে পেরে খুশি সকলে
৩১ মার্চ ২০২৫ ১৩:১৭ | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ২০:৪৫
ঢাকা: আজ পবিত্র ঈদ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উপভোগ করতে ঢাকা ছেড়ে গেছেন কয়েক লাখ মানুষ। আর সেজন্য রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে গাড়ির কোনো চাপ নেই। অলিগলিতেও গাড়ির আধিক্য নেই বললেই চলে। ফাঁকা ঢাকায় অটো ও ব্যাটারিচালিত রিকশা যেন রাজত্ব গড়ে তুলেছে। অলি গলি থেকে শুরু করে সর্বত্র চোখে পড়ছে অটো রিকশা। এদিকে ঈদের দিনে অতিরিক্ত ইনকামের আশায় কিছু কোম্পানি তাদের বাস সার্ভিস চালু রেখেছে। যদিও যাত্রী কম থাকায় একেকটি স্টপিজে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে থাকে বাসগুলো। যানবাহন কিছুটা কম থাকলেও ফাঁকা রাস্তায় ভ্রমন করতে পেরে যাত্রীরা খুশি।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, মৎসভবন, শাহাবাগ, ফার্মগেট, বিজয় স্মরনি, মিরপুর রোড, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, এদিকে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, বাড্ডা, রামপুরা, বিশ্বরোড, বনানী, গুলশান থেকে শুরু করে রাজধানীর সব সড়কেই গাড়ির চাপ খুব কম। চাপ নেই অলি গলিতেও। তবে প্রায় সব ধরনের সড়কেই প্যাডেল চালিত রিকশার চেয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। দ্রুত গতির যানবাহন হিসেবে যাত্রীরাও এই রিশকাকেই বেছে নিচ্ছেন। তবে ফাঁকা সড়কে এসব গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার বেশি হয় বলে জানিয়েছে ট্রাফিক কর্মকর্তারা।

ছবি: সারাবাংলা
মতিঝিল শাপলা চত্বরে ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, একদিকে রাস্তা ফাকা, অন্যদিকে গতি দ্রুত। এগুলোর তো নিয়ন্ত্রন নেই। চালক সহজে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা। আমরা তো এদের কিছু বলতে পারিনা। কারন সড়কে তাদের চলাচলের অনুমতি আছে। আমরা মানুষকে বলি সাবধানে চলাচল করতে। কারন দুর্ঘটনা একটা ঘটে গেলে করার কিছু থাকেনা।
অটোরিকশা করে ফার্মগেট যাবেন এমন এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, রাস্তা ফাঁকা আবার দ্রুত যাওয়া যাবে। তাছাড়া এই রিকশার সিট বড় থাকায় তিনজন অনায়াসে বসা যায়। সেজন্য অটোরিকশা করে যাবো। এদিকে শুধু প্রধান সড়কেই নয় অলি গলিতেও অটোরিকশা বেশি দেখা গেছে।
এদিকে ঈদের দিন ঢাকার সড়ক পুরাই ফাঁকা। অনেক গুরুত্বপূর্ন সিগন্যাল পয়েন্টে ট্রাফিকও দেখা যায়নি। কিছু বাস চলতে দেখা গেছে। সেসব বাসের চালকরা বলছেন, বাড়তি ইনকামের জন্য আজ যাত্রী পরিবহন করছেন।
গাবতলী লিংক ৮ নম্বর বাসের চালক আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ঈদের দিন মালিককে জমা দিতে হবেনা। তাই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়েছি। তিনি বলেন, সাধারন ভাড়ার চেয়ে ৫ টাকা করে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি নিচ্ছি আজ। সাভার ইপিজেড থেকে যাত্রাবাড়ি অন্যান্য দিনে প্রতি ট্রিপে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়, আজ জ্যাম নেই তাই এ খরচ নেমেছে ৩ হাজারে। তাই এদিন যাত্রী কম থাকলেও লাভ বেশি হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে বাসগুলোতে যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় প্রতিটি স্টপেজে দশ মিনিট আবার তার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করে। সেজন্য অনেক যাত্রী বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

ছবি: সারাবাংলা
বিহঙ্গ গাড়ির যাত্রী হুমায়ুন কবীর তার পরিবার নিয়ে বাস থেকে নেমে যাচ্ছিলেন। চালক অনুরোধ করায় আবার সিটে বসেছেন। হুমায়ুন কবীর বলেন, আধা ঘন্টা আগে মতিঝিল থেকে উঠেছে, মাত্র শাহাবাগ। তাহলে জ্যামের দিনের সঙ্গে তো কোনো পার্থক্য থাকলোনা। সিএনজি করেই চলে যাই। বিহঙ্গ পরিবহনের চালক সোহেল আহমেদ বলেন, পুরো রাস্তায় কোনো যাত্রী নেই। যদি দুই একজন পাওয়া যায়। তিনি বলেন, রাস্তা ফাঁকা দ্রুত যাওয়া যাবে।
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আর এ ঈদকে আরো উপভোগ্য করে তুলতে কেন্দ্র আপন ঠিকানায় পাড়ি জমিয়েছেন লাখ লাখ ঢাকাবাসী। মানুষের চাপ কমায় অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে রাজধানী ঢাকা। কমেছে যানজট ও ভোগান্তি। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ির চাপ কম থাকায় নির্বিঘ্নে ও দ্রুত যাতায়াত করতে পেরে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ঢাকায় থেকে যাওয়া পথচারী ও যাত্রীরা।
সারাবাংলা/জেআর/এনজে