ভূমিকম্পের পরেও মিয়ানমারে সামরিক হামলা অব্যাহত
৩০ মার্চ ২০২৫ ০৯:৪২ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ১২:২০
মিয়ানমারের সামরিক সরকার ব্যাপক ভূমিকম্পের পরও দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্পে ১ হাজার ৬০০-র বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পরও এ ধরনের হামলা চালানোর ঘটনাকে জাতিসংঘ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও লজ্জাজনক বলে নিন্দা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ বিবিসিকে বলেন, ‘যখন উদ্ধারকর্মীরা মানুষকে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করার চেষ্টা করছে, তখন সামরিক বাহিনীর বোমা বর্ষণ করা অবিশ্বাস্য ও বর্বরতার শামিল।’
তিনি সামরিক বাহিনীর সকল অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যে কেউ সেনাবাহিনীর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তাদের এখনই এগিয়ে আসা উচিত এবং স্পষ্ট বার্তা দেওয়া উচিত যে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিবিসি বার্মিজ নিশ্চিত করেছে যে, উত্তর শান রাজ্যের নাউংচোতে এক বিমান হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন। এই হামলা স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সংঘটিত হয়, যা ভূমিকম্পের মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে ঘটে।
গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো, যারা সামরিক শাসন উৎখাত করতে লড়াই করছে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাগাইং অঞ্চলে চাউং-উ শহরে বিমান হামলার খবর জানিয়েছে। এছাড়াও থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী এলাকায়ও হামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া প্রশাসনের প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) ঘোষণা করেছে যে, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলিতে দুই সপ্তাহের জন্য আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযান বন্ধ রাখা হবে, শুধুমাত্র আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সাগাইং অঞ্চলে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ম্যান্ডালে এবং রাজধানী নেপিদো পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
সামরিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ১ হাজার ৬৪৪ জন নিহত হয়েছে এবং আরও অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। চার বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধের মাঝে এই ভূমিকম্প নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর গণবিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরবর্তীতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক প্রতিরোধে রূপ নেয়। বর্তমানে দেশটির বিশাল অংশ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যেখানে সামরিক সরকার কেবল ২৫ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে বিবিসির এক অনুসন্ধানে প্রকাশ পায়।
সারাবাংলা/এনজে