নীলফামারীতে ঈদের কেনাকাটায় পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি থ্রি-পিস
২৮ মার্চ ২০২৫ ২২:১৬ | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫ ০০:০১
নীলফামারী: ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে নীলফামারী জেলা শহরের অভিজাত মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা।
বিশেষ করে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ঘুরে তারা পছন্দের পোশাক কিনছেন। এবারের ঈদে নারীদের মধ্যে পাকিস্তানি থ্রি-পিসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে, পুরুষদের মধ্যে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও গোলগলা টি-শার্টের চাহিদা রয়েছে শীর্ষে। একই চিত্র ফুটপাতের দোকানগুলোতেও, যেখানে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন তুলনামূলক কম দামে কেনাকাটার জন্য।
শহরের অভিজাত শপিংমলগুলোর মধ্যে পৌর সুপার মার্কেট, মকবুল হোসেন সুপার মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, এবাদত প্লাজা ও বড় বাজারে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। নতুন পোশাকে ঈদ উদযাপন করতে ক্রেতারা দেরি না করে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের পোশাক ও জুতা-স্যান্ডেল।
নীলফামারী বড় বাজারের মা কালেকশনের মালিক সেলিম হোসেন বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এবার ঈদের বাজার দ্রুত জমে উঠেছে। ১৫ রমজানের পর থেকেই ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতার চাপ থাকে, বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর ভিড় দেখা যায়।’
একই বাজারের স্মৃতি গার্মেন্টসের মালিক মকবুল হোসেন বলেন, ‘এবার জামদানি শাড়ি, পাকিস্তানি থ্রিপিস, নতুন ফারসি, লেহেঙ্গা, ফ্রক, গাউন ফ্রক, বুটিকসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। এর মধ্যে পাকিস্তানি থ্রিপিস ও গাউন ফ্রকের বিক্রি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে।’
নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারো বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত এমন অবস্থা থাকে, তাহলে মহাজনের দেনা ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করে কিছু লাভও করতে পারব বলে আশা করছি।’
বাজার করতে আসা ক্রেতারা জানাচ্ছেন, পোশাকের দাম অনেক বেশি। পৌর শহরের নিউ বাবু পাড়া মহল্লার গৃহিণী সিমলা বেগম বলেন, ‘সকালে এসেছি ছোট ভাই-বোন ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করতে। কিন্তু মার্কেটে এসে দেখি প্রচুর ভিড়, আর দোকানদাররা জামাকাপড়ের দাম চাচ্ছেন অনেক বেশি। তাই এখনো কিছু কেনা হয়নি।’
একই মহল্লার খোকন মিয়া বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি দাম বাচ্চাদের পোশাকে। ৫৫০ থেকে ১০০০ টাকার নিচে ভালো কোনো পোশাক মিলছে না। পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কিনতে হলে ফুটপাত ছাড়া উপায় নেই। তাই তুলনামূলক কম দামের জন্য ফুটপাতের দোকান থেকেই কেনাকাটা করছি।’
ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, মার্কেটের তুলনায় কম দামে ভালো মানের পোশাক তারা দিতে পারেন। ফুটপাতের বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মার্কেটের পণ্যের সঙ্গে আমাদের পণ্যের খুব বেশি পার্থক্য নেই। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’
আরেক ব্যবসায়ী কায়সার আলী বলেন, ‘আমরা কম খরচে ভালো মানের পোশাক দেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ আমাদের দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারীর বেতন দিতে হয় না। তাই আমরা কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পারি।’
ঈদের বাজার নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, ‘শপিংমল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি টহল রয়েছে। এ ছাড়া অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’
সারাবাংলা/এইচআই