Monday 31 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের যুগ শেষ: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৮ মার্চ ২০২৫ ০৯:৪২ | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ১২:৪৪

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ছবি: সংগৃহীত

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা গাড়ির শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের যুগ শেষ।’ টোকিও, বার্লিন ও প্যারিসসহ বিভিন্ন সরকার ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক নীতির কঠোর সমালোচনা করেছে এবং কিছু দেশ পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

কার্নি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের নীতি কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে স্থায়ীভাবে বদলে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুরনো সম্পর্ক, যা অর্থনৈতিক একীকরণ, নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল, তা শেষ।’ ট্রাম্পের এই শুল্ককে তিনি অন্যায্য এবং বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রাদেশিক নেতাদের ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন এবং আগামী সপ্তাহে প্রতিশোধমূলক বাণিজ্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কার্নি বলেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে লড়াই করা, রক্ষা করা ও নির্মাণ করা। আমরা মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে এমন পালটা ব্যবস্থা নেব যা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ প্রভাব ফেলবে, কিন্তু কানাডার জন্য ক্ষতি কমাবে।’

ট্রাম্প বুধবার (২৬ মার্চ) ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ৩ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা গাড়ি ও যন্ত্রাংশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে উৎপাদন কমবে, দাম বাড়বে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

যুক্তরাষ্ট্র গত বছর প্রায় ৪৭৫ বিলিয়ন ডলারের গাড়ি আমদানি করেছে, যার বেশিরভাগই মেক্সিকো, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও জার্মানি থেকে এসেছে। শুধু ইউরোপীয় গাড়ি নির্মাতারাই ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করেছে।

বিজ্ঞাপন

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, এই শুল্ক ব্যবস্থা মূল্য শৃঙ্খলা ব্যাহত করবে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে ও চাকরি নষ্ট করবে, যা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে মিলে ফ্রান্স এমন ব্যবস্থা নেবে যাতে ট্রাম্প তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেন।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ভুল বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, শুল্ক ও বিচ্ছিন্নতাবাদ সম্পদের ক্ষতি ছাড়া কিছুই আনবে না।

কানাডা পালটা ব্যবস্থা হিসেবে অপরিশোধিত তেল, পটাশ ও অন্যান্য পণ্যের রফতানির ওপর শুল্ক বসানোর কথা বিবেচনা করছে। কার্নি বলেছেন, আমাদের কর্মসংস্থান ও দেশকে রক্ষার জন্য কোনো কিছুই টেবিলের বাইরে নেই।

দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে, এপ্রিলের মধ্যে তারা একটি জরুরি প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ব্যবস্থা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়মের পরিপন্থি এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজের সমস্যার সমাধান আনবে না।

বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে ট্রাম্প প্রশাসন এখনও তার সিদ্ধান্ত বদলানোর ইঙ্গিত দেয়নি, তবে প্রতিশোধমূলক বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/এনজে

কানাডা যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর