ঈদ নিরাপত্তা: স্বাভাবিকের চেয়ে দেড়গুণ বেশি পুলিশ নামাচ্ছে সিএমপি
২৭ মার্চ ২০২৫ ১৭:৫৬ | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫ ১৬:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মুসলমান ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিসহ টানা বন্ধে চট্টগ্রাম নগরীতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড়গুণ বেশি পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। সাদা পোশাকের সদস্যরাসহ সকল ইউনিটকে মাঠে নামানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
সিএমপির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রমজানের শুরু থেকেই পুরো চট্টগ্রাম নগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মূল সড়কের পাশাপাশি অলি-গলিতে টহল জোরদার করা হয়েছে। মধ্য রমজান থেকে মার্কেট-শপিংমলের সামনে পুলিশি কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। এর পরের কার্যক্রম শুরু হবে ঈদের ছুটির শুরুর দিন থেকে, যাতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা মাঠে নামবেন।
ঘরমুখো মানুষকে স্বস্তিতে চট্টগ্রাম ছাড়তে দেওয়ার জন্যও পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া ঈদের ছুটিসহ বন্ধের পুরোসময় ফাঁকা নগরী, ঈদ জামাত এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে ঘিরে এবার ঈদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) মাহমুদা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যখন রমজান নিয়ে প্ল্যান করছিলাম, তখন ঈদেরটাও মোটামুটি করে রেখেছিলাম। কারণ রমজানের শেষ ১০ দিনে মার্কেটগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ে। মার্কেটকেন্দ্রিক আমাদের পেট্রল টিম কাজ করছে। আবার ঈদের ছুটিতে বাড়ি-ঘরে যাওয়ার তাড়া থাকে। এবার সরকারি ছুটি বেশি। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে, সেজন্য বাস টার্মিনালগুলোতে আমরা নিরাপত্তা বাড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় নগরী ফাঁকা হয়ে যাবে। মানুষজন থাকবে না। আমাদের নাগরিকদের আমরা আহ্বান জানাবো, নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। নিজেদের বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালে তাহলে সেটা মোবাইলের মাধ্যমে দেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন দেখতে পারবে। এ ছাড়া ঈদে পুলিশের টহল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বাড়ানো হবে।’
এডিসি মাহমুদা আরও জানিয়েছেন, ঈদের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে নগরীতে দেড়গুণ বেশি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানাগুলো থেকে আবাসিক এলাকার তালিকার পাশাপাশি তাদের চূড়ান্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আবাসিক এলাকা এবং বাণিজ্যিক ভবনগুলোর দিকে পুলিশের নজর বেশি থাকবে বলে তিনি জানান।
নগর পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মোখলেছুর রহমান সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা এবং ফাঁকা নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সাদা পোশাকে ২০০ পুলিশ সদস্য এবার মাঠে নামানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি পুলিশের অন্যান্য টিমও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিবছরই আমাদের একটা নিরাপত্তা কার্যক্রম থাকে। এটা আমরা ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। সিটিএসবির ২০০ সদস্যকে আমরা মাঠে রাখব। ঈদের নামাজ, বিনোদন কেন্দ্র, ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তা- মোটামুটি সবকিছু নিয়েই প্ল্যান করা হয়েছে। মানুষ যাতে ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় হয়রানির শিকার না হয়, সেটাও আমরা নজরদারিতে রাখব।’
সিএমপি কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নগরীতে যেভাবে ছিনতাই-চুরি বেড়ে গিয়েছিল, রমজান আসার আগেই সেটার লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ১৬ থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রচুর চোর-ছিনতাইকারীসহ পেশাদার অপরাধী গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই কমে যাওয়ায় এবার নগরবাসী স্বস্তিতে ঈদের বাজার করতে পারছেন। একইভাবে ঈদুল ফিতরও স্বস্তিতে কাটবে বলে তাদের আশা।
সারাবাংলা/আইসি/ইআ
ঈদ নিরাপত্তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ পবিত্র ঈদুল ফিতর সিএমপি