যেদিকে তাকাই সেদিকেই একটা শব্দ ‘সিন্ডিকেট’: লুৎফে সিদ্দিকী
২৫ মার্চ ২০২৫ ১৫:১৫ | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৬:৫১
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী
ঢাকা: সিন্ডিকেটের কারণে বাজার ঠিকভাবে কাজ করছে না- বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, “যেদিকে তাকাই সেদিকেই একটা শব্দ ‘সিন্ডিকেট’। মার্কেট ফোর্স যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে কাজ করছে না। আইনের ভেতরেই কিছু একটা করে রাখা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) সন্দীপের ফেরি উদ্বোধন হলো, সেখানেও নাকি সিন্ডিকেট ছিল! আমরা সিন্ডিকেটতন্ত্র থেকে কীভাবে মুক্তি পাবো সেটিও ইকোনমিক রিফর্মের একটি অংশ, আর আমরা সেই চেষ্টাই করছি।”
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে ‘এলডিসি গ্রাডুয়েশন: ইমপ্যাক্টস অন অ্যাগ্রো সেক্টর এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন অ্যান্ড দ্য ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম’ (ইআরএফ) ও ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন’ যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও প্যানেল আলোচক ছিলেন ডি৮ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর মহাসচিব আশরাফুল হক চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএমএ) সভাপতি কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন করতে হবে। আজ কিংবা কাল আমাদের তা করতেই হবে। ইইউ’র বাজারে আমাদের ডিউটি ফ্রি এক্সেস আছে। তারা বলছে, তোমাদের এতো সুবিধা দিচ্ছি, তোমাদের ট্যাক্স-জিডিপি এত কম কেন? প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট এত কম কেন? ফলে এলডিসি গ্রাজুয়েশন নিয়ে না ভেবে আমাদের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা নিজেরা কতোটা উন্নত হতে পারি- তা ভাবতে হবে। সরকার, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা কে কী করতে পারি, কী করতে হবে- তা ভাবতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের এখানে একটি হাব হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে ভারত ও চীন হাব হতে পারবে না। এখানে আমাদের হাব হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমাদের এখন সেই চেষ্টা কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া আমরা প্রসেসিং সেন্টার করতে পারি। হালাল মাংস অবশ্যই করা যেতে পেরে। আমাদের এখানে অবশ্যই পিপল প্রসেসিং করা যেতে পারে। আমরা আমাদের জনগণকে আরও বেশি দক্ষ করে প্রবাসে পাঠাতে পারি।”
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “মার্কেট ইকোনমিকে আরও বেশি ইকোনমিক করতে হবে। চট্রগ্রাম বন্দরকে আরও বেশি কার্যকর করতে হবে। আমরা প্রথমে দেখেছি, সরকারের ভেতরে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ থাকে না। এক মন্ত্রণালয় আরেক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। আমরা এখন আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি করেছি। কোন মন্ত্রণালয়ে কোন কাজ আটকে আছে, আমরা সেখানে তা আলোচনা করি। আগামী মাসের মধ্যে ন্যাশনাল সিঙ্গেল ইউন্ডো চালু হবে।”
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, “ইনভেস্টমেন্ট সামিট এবার একটু ভিন্ন আকারে হবে। সেখানে সেমিনার বা ভাষণ টাইপের পোগ্রাম কম থাকবে। কী কী করা যেতে পারে, কেবলমাত্র তা নিয়েই আলোচনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, দেশের পোশাক খাতে ক্রেতাদের সমস্যা দূর করতে তাদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। পোশাক খাতের ক্রেতাদের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে আমরা এখন প্রতিমাসে একটি বৈঠক করছি। এরইমধ্যে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে পোশাক খাতের ক্রেতাদের সঙ্গে আর কখনও বৈঠক হয়নি। আমরা পোশাক খাতের ব্রান্ডের গ্লোবাল নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। দেশে থেকে পোশাক খাতের ক্রয়াদেশ অন্যদেশে স্থানান্তর হচ্ছে- এমন একটা কথা শোনা যাচ্ছিল, সেটি এখন আর কেউ বলে না, বলবেও না। বরং কয়েক মাস ধরে দেশের পোশাক খাতের রফতানি আয় বাড়ছে। আইএলও-তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে মামলা আছে, সেটি কীভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়েও আমরা কাজ করছি।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আরএস
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী