ফ্লাইওভারের নিচে নারীর লাশ, পরিচয় ও খুনের রহস্য উদঘাটন
২৪ মার্চ ২০২৫ ১৮:৫৯ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ২০:২৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ফ্লাইওভারের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার পরিচয় ও মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি জানিয়েছে, পেশায় পোশাককর্মী ওই নারীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে তার প্রেমিক। বিয়ে ও ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ দেওয়ায় তাকে খুন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নগরীর পাহাড়তলীতে পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
পিবিআইয়ের তথ্যানুযায়ী, খুনের শিকার ওই নারীর হাতে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম জ্যোৎস্না বেগম (৩০)। বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। গ্রেফতার করা হয়েছে তার প্রেমিক নয়ন বড়ুয়াকে (৩২)। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়।
রোববার (২৩ মার্চ) রাতে নগরীর চান্দঁগাও থানার মোহরা এলাকা থেকে নয়ন বড়ুয়াকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গত শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে নগরীর লালখান বাজার এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে খুলশী থানা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নয়ন বড়ুয়া ও জ্যোৎস্না বেগম উভয়ই নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার কেডিএস গার্মেন্টেসে কর্মরত ছিলেন। এ সুবাদে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নয়ন বিবাহিত, তার দুই সন্তান আছে। জ্যোৎস্নার বিয়ে হয়েছিল। তবে গত বছর স্বামীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকায় একটি ভবনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে নয়ন ও জ্যোৎস্না একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তারা থাকতেন। সম্প্রতি জোৎস্না বেগম নয়ন বড়ুয়াকে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান। গত শনিবার সকালে এ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে জোৎস্নাকে গলাটিপে হত্যা করেন নয়ন বড়ুয়া।
পিবিআই পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘খুনের পর নয়ন জোৎস্নার লাশ কম্বল মুড়িয়ে দড়ি ও ওড়না দিয়ে বেঁধে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরেন। এরপর বেলা ১২টার দিকে রিকশায় ওই লাশ নিয়ে ফ্রিপোর্ট হয়ে সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় যান। এরপর সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে লালখানবাজার এনে এক্সপ্রেসওয়ের নিচে জ্যোৎস্নার লাশ ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা নয়নকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের বিষয় আমাদের কাছে স্বীকার করেছে।’
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম