বিসিক ঈদ মেলার উদ্বোধন
২৩ মার্চ ২০২৫ ১৬:২২ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:৪০
ঢাকা: বিসিকের আয়োজনে দেশের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের নিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বিসিক ঈদ মেলা ২০২৫।
রোববার (২৩ মার্চ) তেজগাঁওয়ের বিসিক প্রধান কার্যালয়ে ঈদ মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। উদ্বোধন শেষে তিনি মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

বিসিক ঈদ মেলার স্টল পরিদর্শন করছেন শিল্প উপদেষ্টা।
মেলায় বিসিকের উদ্যোক্তাদের জামদানি, চামড়াজাত পণ্য, শতরঞ্জি, শীতলপাটি, পাটজাত পণ্য, মণিপুরী শাড়ি, খাদ্যজাত, বাঁশ-বেতজাত ইত্যাদি পণ্যের ৩০টি স্টলে বাহারি ডিজাইনের নানান পণ্যের সমাহার।
বিসিকের পৃষ্ঠপোষকতায় মেলাটি ২৩ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত চালু থাকবে।
মেলা উপলক্ষ্যে বিসিকের উদ্যোগে সিএমএসএম শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিসিক প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএম) শিল্পের ভূমিকা: সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের লক্ষ্য উদ্যোক্তা তৈরি করা। আমাদের উদ্যোক্তাদের পাশে দাড়াতে হবে ও নতুনদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।’
সেমিনারের আয়োজনের অংশ হিসেবে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তা এবং নীতিনির্ধারকরা শিল্পখাতের বর্তমান অবস্থা, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন।
বিসিক থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা শেখ নুরুল হুদা মধু শিল্পের প্রসার ও এর দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য ‘মধু বোর্ড’ গঠনের দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের মধু উৎপাদন ও রফতানির সম্ভাবনা অনেক, সঠিক নীতিমালা ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা পেলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে পরিণত হতে পারে’।
চামড়া শিল্পের উদ্যোক্তা তাহমিনা শাম্মী চামড়া শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য বৈশ্বিক মানের মার্কেটিং কৌশল গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে, যদি সঠিক বিপণন ও নেটওয়ার্কিং নিশ্চিত করা হয়’।
তাঁত শিল্পের প্রসারে কাজ করা উদ্যোক্তা লাকী ভূঁইয়া বলেন, ‘তাঁত শিল্প বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই শিল্পের বিকাশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি’।

এ সময় সিএমএসএম শিল্পের ভূমিকা: সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিসিক ভবনের নিচতলায় একটি স্থায়ী প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে দেশীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পণ্যসমূহ নিয়মিত প্রদর্শন ও বিক্রি করা হবে।
তিনি আরও জানান, বিসিক উদ্যোক্তাদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস, ঋণ কর্মসূচি, উদ্যোক্তা তৈরির কর্মসূচি, এপিআই শিল্প পার্ক, নতুন শিল্প নগরী গঠন ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা, লবণ শিল্প, মধু প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া শিল্পের উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান জানান, বিসিক দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের অঙ্গীকারবদ্ধ। উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিসিক শিল্প নগরীতে সকল ফ্যাসিলিটিজ নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তি ও মার্কেটিংয়ে সহায়তা করতে হবে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নুরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব এম.এ. কামাল বিল্লাহ, অতিরিক্ত সচিব রশিদুল হাসান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও সিএমএসই ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ আলী সাবেত প্রমুখ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসডব্লিউ