বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে যা বলছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর
১৮ মার্চ ২০২৫ ১২:৫৮ | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ১৫:০৯
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংখ্যালঘু অধিকার সংক্রান্ত ‘ভিশন’ অনুসরণ করছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস।
সোমবার (১৮ মার্চ) ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রুস বলেন, ‘মন্ত্রী রুবিও অবশ্যই ট্রাম্পের ভিশন এবং সেই অনুযায়ী নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো অনুসরণ করছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করেন। তিনি পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, লুটপাট এবং নৈরাজ্যের তীব্র নিন্দা জানাই।’
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং কূটনৈতিক মহলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মূল্যায়ন এবং তিনি কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা জানতে চাওয়া হলে, মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘মন্ত্রী রুবিও অবশ্যই ট্রাম্পের ভিশন অনুসরণ করেন’। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি।
তিনি আরও বলেন, ‘কূটনৈতিক আলোচনা, সরকার থেকে সরকার পর্যায়ের দৃষ্টিভঙ্গি এবং কৌশলগত বিষয়গুলো নিয়ে আমি এখানে অনুমান করতে চাই না। যখন বিষয়টি কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যে পড়ে, তখন তা আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়।’
এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরকালে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে জাতিসংঘের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘তিনি (গুতেরেস) বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার সময় মানবাধিকার বিষয়ক যেকোনো উদ্বেগের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।’
জাতিসংঘ সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে। তবে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে।
ভারতে অবস্থানরত মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গাব্বার্ড বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন এখনও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম প্রধান উদ্বেগের বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ক্যাথলিক ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া নির্যাতন, হত্যা এবং নিপীড়ন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসন এই বিষয়ে বরাবরই সোচ্চার ছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যদি ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করেন, তাহলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ভবিষ্যতে আরও কড়া অবস্থান নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
সারাবাংলা/এনজে