Sunday 16 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ হলে চাল সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি

ডিস্ট্রিক্ট করসপন্ডেন্ট
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৮:০৬ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:১৬

‘নওগাঁ জেলার সর্বস্তরের জনগণ ও নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়

নওগাঁ: নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা হলে চাল সরবরাহ বন্ধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটি।

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ডাকা প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘নওগাঁ জেলার সর্বস্তরের জনগণ ও নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, বিএনপি, জামায়াত, বাসদ, একুশে পরিষদ নওগাঁসহ নওগাঁর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এর আগে শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আহ্বানে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের চলমান ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নওগাঁ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় নওগাঁ মেডিকেল বন্ধের অপচেষ্টা রুখতে বিএমএ নওগাঁর সভাপতি চিকিৎসক ইস্কেন্দার হোসেনকে আহ্বায়ক করে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটি গঠিত হয়।

নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ইস্কেন্দার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজমুল হক, নওগাঁ পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান, জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম রায়হান আলম, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাদ হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি মনিরুল হক, শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান রাকিব, নুসাইবা বিনতে হক প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বক্তারা বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ কখনোই মানহীন হতে পারে না। নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক ফলাফল অন্যান্য মেডিকেল কলেজের থেকে অনেক ভালো। শুধু ভবন না থাকা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান যাচাইয়ের মাপকাঠি হতে পারে না। সরকারি প্রতিষ্ঠান মানহীন হলে এর দায়ভার সরকারের। মান উন্নয়ন না করে উলটো সরকার যে মানহীন আখ্যা দিয়ে মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে যাচ্ছে, এটি হঠকারী ছাড়া কিছুই না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে মেডিকেল শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতের বিশাল ঘাটতি তৈরি হবে। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ও সংকোচিত হয়ে পড়বে। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সংশ্লিষ্টদের সরে আসার দাবি করা হয়। অন্যথায় নওগাঁবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ইস্কেন্দার হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে জানতে পারছি, অন্তর্বর্তী সরকার মানহীন তকমা লাগিয়ে নওগাঁ মেডিকেল কলেজসহ ৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ কখনোই মানহীন হতে পারে না। আমাদের এখানে শিক্ষার্থী অনুপাতে প্রতি ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন করে শিক্ষক আছে। আমার মনে হয় না এটি বাংলাদেশের আর কোনো মেডিকেল কলেজে আছে। এখানে যারা শিক্ষক আছেন তারা সকলেই উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে ২৬টি মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা হয় সেই পরীক্ষায় বরাবরই নওগাঁ মেডিকেল কলেজ প্রথম স্থান কিংবা দ্বিতীয় স্থানে থাকা। ভালো ফলাফল সত্ত্বেও এই মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের হঠকারিতা। এই কলেজ বন্ধ করা হলে নওগাঁ থেকে চাল, আম সবরাহ বন্ধ, অনশনসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সমাবেশে একাত্মতা ঘোষণা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজমুল হক বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের হঠকারিতা ছাড়া আর কিছুই না। নওগাঁবাসী কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না। কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান মানহীন হলে সেটার মান উন্নত করার দায়িত্ব সরকারের। প্রতিষ্ঠান বন্ধ কোনো সমাধান হতে পারে না। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের অপচেষ্টা রুখতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সব সময় রাজপথে থাকবে। প্রয়োজনে নওগাঁ থেকে সারাদেশে চাল, আম সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মুক্তার হোসেন বলেন, নতুন ৬টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে মানের দিক থেকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ সবচেয়ে এগিয়ে আছে। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জেনেছি নতুন যে ৬টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে এদের মান যে পর্যায়ে উন্নত হওয়ার কথা ছিল সেই পর্যায়ে নাকি আসেনি। যার কারণে সরকার এই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য মেডিকেল কলেজে নিয়ে এই মেডিকেল কলেজগুলোকে বন্ধের কথা ভাবছে। তবে এখনো বন্ধের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

সারাবাংলা/এইচআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর