Thursday 13 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাবিতে ১৫ জুলাই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা পূর্বপরিকল্পিত: তথ্যানুসন্ধান কমিটি

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৯:১৭ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ২১:০৮

উপাচার্যের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন সত্যানুসন্ধান কমিটির সদস্যরা

ঢাবি: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানের সময় গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই হামলা সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলাম সুপন।

বৃহস্প্রতিবার (১৩ মার্চ) ঢাবি লাউঞ্জে উপাচার্যের হাতে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় সত্যানুসন্ধান কমিটির সদস্যরা প্রায় ৫৫০ পাতার একটা প্রতিবেদন উপাচার্য বরাবর জমা দেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘১৫ জুলাই বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় আমরা দেখেছি মল চত্বরে যারা হামলা করেছে তাদের মাথায় সাদা ক্যাপ পরিহিত ছিল। এরপর যারা আহত হয়েছে তারা যখন ঢাকা মেডিকেলে গিয়েছেন তাদেরকেও হামলা করেছিল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ। এরপর ডাক্তারদের বলা হয়েছিল চিকিৎসা না দিতে। যেখানে আমাদের প্রশাসনেরও যোগসাজশ থাকতে পারে। যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত।’

কাজী মাহফুজুল ইসলাম সুপন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত হামলা হয়েছে আমরা তার সবকিছু এ প্রতিবেদনে আনার চেষ্টা করেছি। সেখানে আমরা দেখেছি ১৫ জুলাই নারী শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। যেখানে ১২২ জন ঢাবি শিক্ষার্থী যারা হামলায় জড়িত তাদের প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এ ছাড়া বহিরাগত ও অনেক শিক্ষার্থীর প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। এ প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেট থেকে পাশ হয়ে আসলে আমরা তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানাবো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে। এ ছাড়া যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের না তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে বলা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

কোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করার সময় বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজতে গেলে আমরা সেখানে তার কোনো হার্ডডিস্ক পায়নি। সব হার্ডডিস্ক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে একটা মেইল ও নাম্বার পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীরা সেখানে জুলাইয়ে হামলার নানা ছবি, ভিডিও পাঠিয়েছে। এ ছাড়া আমরা ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল পত্র-পত্রিকার সংবাদগুলো দেখেছি সেটার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদনটি বানানোর ক্ষেত্রে কে ছাত্রলীগ কে বৈষম্যবিরোধী আমরা সেটা দেখিনি। যাদেরকে হামলা করতে দেখা গেছে তাদের বিষয়ে উল্লেখ করেছি। এ ছাড়া আমরা হামলার ক্ষেত্রে তিন স্তর প্রতিবেদন তৈরি করেছি। যেখানে, যে মামলাগুলো উচ্চ আদালতে গেলে ঠিকবে সেগুলোকে আমরা নিয়েছি।’

১৫ জুলাই হামলায় ঢাবি সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাবিতে হামলার ক্ষেত্রে প্রশাসনের যোগসাজশ থাকতে পারে। কেননা ১৫ জুলাই ভিসির বাসার সামনে হামলা হবে তা তিনি জানবেন না এটা হতে পারে না। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর যখন হামলা হচ্ছিল তখন আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধু হলের পকেট গেইট দিয়ে বহিরাগতরা প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের পিঠিয়েছে। এক্ষেত্রে হলের কর্মকর্তারা প্রভোস্টদের ফোন করে জানালেও তাদেরকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া, সেদিন প্রক্টরিয়াল টিমের ভূমিকা আমরা দেখেছি তারা একদম নিষ্ক্রিয় ছিল। কিন্ত ১৬ জুলাই তাদের সক্রিয় দেখা গেছে। এটা এখানে স্পষ্ট যে প্রশাসনের যোগসাজশ আছে কিনা।’

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চলাকালীন ৭০জন শিক্ষককে পাওয়া গেছে যারা শিক্ষার্থীদের জামাত- শিবির-ছাত্রদল- রাজাকার বলে ট্যাগিং করেছে। যেটা আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছে। কেননা শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীরা প্রভাবিত হবে সেটা স্বাভাবিক। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে অনেকে শিকার করেছেন এবং সেটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে, আমরা সেটা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।’

উল্লেখ্য, প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার সময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল ইসলাম হকসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এআইএন/এইচআই

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ঢা‌বি তথ্যানুসন্ধান কমিটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর