এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাফুফেকে বরাদ্দ, প্রতিবাদে রাস্তায় চসিক মেয়র
৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩২ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৩
চট্টগ্রামে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন। ছবি: সারাবাংলা
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) বরাদ্দ দেয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি এ সিদ্ধান্তকে হঠকারী হিসেবে মন্তব্য করেছেন। একইসঙ্গে মেয়র সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) ঘোষিত এডহক কমিটি বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানান সিটি মেয়র। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে ২৫ বছরের জন্য বাফুফের কাছে লিজ এবং সম্প্রতি ঘোষিত এডহক কমিটি বাতিলের দাবিতে এ মানববন্ধনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রীড়া সংগঠক, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, পেশাজীবী ও বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
স্টেডিয়ামের বরাদ্দের প্রসঙ্গে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের এই স্টেডিয়ামটিতে সিজেকেএস ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবলসহ ৪৩টি ইভেন্ট পরিচালনা করে। অথচ কোনো কারণ ছাড়াই আমরা দেখতে পেয়েছি একদিন সকালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে স্টেডিয়ামটি ২৫ বছরের জন্য ইজারা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের এ মেয়র হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে এবং এ সিজেকেএসের সাবেক কাউন্সিলর হিসেবে এ প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাতে পারি না। এটা চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে একটা বৈষম্যের সিদ্ধান্ত। মেয়র হিসেবে আমি বলতে চাই, অনতিবিলম্বে এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে।’
মেয়র বলেন, ‘যে স্টেডিয়ামটি সবসময় চট্টগ্রামের খেলোয়াড় প্রোডাকশনের জন্য একটা ফ্যাক্টরি হিসেবে কাজ করেছে। এই মাঠ থেকে বাংলাদেশের বরেণ্য ক্রিকেটার মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খান এবং তামিম ইকবালদের মতো বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়কদের জন্ম হয়েছে। ফুটবলে আশীষ ভদ্র, দিপু, এফআই কামাল, মামুন, নাজিমসহ অনেকের হাতেখড়ি হয়েছে এ স্টেডিয়াম থেকে। দুর্ভাগ্যের বিষয় আজকে খুবই খারাপ লাগে, যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা অকাতরে রক্ত দিয়েছে, শ্রমিক-জনতা প্রাণ দিয়েছে, ১৬ বছর ধরে আমরা একটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য, ঠিক তখনই এই চট্টগ্রামকে আবারও বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম হিসেবে তৈরির জন্য ১২ শর্তে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে ‘লিজ’ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। গত ২ জানুয়ারি এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
মানববন্ধনে দেয়া বক্তব্যে সিজেকেএস’র এডহক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘সেখানে কোনো খেলোয়াড়, কোচ কিংবা সিজেকেএসের কোনো কর্মকর্তার নাম আমরা দেখছি না, এটা আমাদের অবাক করেছে। কারণ ৪৩টি ইভেন্ট পরিচালনা করার মতো তাদের আদৌ যোগ্যতা কিংবা দক্ষতা আছে কি না, আমাদের সন্দেহ রয়েছে। এখানে যারা কোচ, খেলোয়াড়, প্রাক্তন খেলোয়াড়, সিজেকেএসের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক আছেন, তারাই এখানে নেতৃত্ব দেবেন এবং এটাই হয়ে এসেছে।’
ক্রীড়া সংগঠক ও চসিকের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও মো. কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ মো. খান ও ইসমাইল বালি, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তবর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহনওয়াজ, সিজেকেএস’র সাবেক সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আবুল বশর, শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, নির্বাহী সদস্য একেএম আব্দুল হান্নান আকবর, আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার শহীদুর রহমান, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাজিম উদ্দিন, ক্রিকেট কোচ মাসুম উদ্দৌলা।
সারাবাংলা/আরডি/এনজে