বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত দ. কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট
২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৫ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪১
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়লকে বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে দেশটির আদালত। ২০২৪-এর ডিসেম্বরে সামরিক আইন জারি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর তাকে এই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
ইউনের এই পদক্ষেপ দেশটিকে এক নজিরবিহীন রাজনৈতিক সংকটে ফেলে দেয় এবং তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সিউলের একটি আদালত ইউনের আটকাদেশ বাড়ানোর আবেদন খারিজ করার পর সোমবারের (২৭ জানুয়ারি) মধ্যে তাকে অভিযোগ গঠন বা মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
‘বিদ্রোহের মূল হোতার শাস্তি এখন শেষ পর্যন্ত শুরু হলো’- বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মুখপাত্র হান মিন-সু।
ইউনের আইনজীবীরা অভিযোগের সমালোচনা করে তদন্তে কোনো অবৈধতা থাকলে তা প্রকাশ করার অঙ্গীকার করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিদ্রোহের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড। তবে দেশটিতে কয়েক দশক ধরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি, তাই এটি অনিশ্চিত।
অন্যদিকে, সাংবিধানিক আদালত ইউনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ থেকে অপসারণ বা পুনর্বহালের বিষয়ে আলোচনায় নেমেছে। কিন্তু, সামরিক আইন ঘোষণার অপরাধ তদন্তে ইউন সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ইউন তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে বিচারের মুখোমুখি হবেন। তাদের বিরুদ্ধে সামরিক শাসন জারির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪-এর ৩ ডিসেম্বর এক নজিরবিহীন টেলিভিশন ঘোষণায় ইউন বলেন, তিনি উত্তর কোরিয়াপন্থি রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সামরিক আইন জারি করেন। সামরিক বাহিনী তখন সংসদের সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা লি জে-মিয়ং সংসদের সামনে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান এবং সংসদ সদস্যদের সামরিক আইন বাতিলের জন্য তাৎক্ষণিক ভোট দিতে বলেন।
ইউনের ঘোষণার দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে, ১৯০ জন সংসদ সদস্যের সর্বসম্মতিক্রমে সামরিক আইন রদ করেন। এদের মধ্যে ইউনের নিজের দলের সদস্যরাও ছিলেন।
১৪ ডিসেম্বর সংসদে ইউনের অভিশংসন পাস হয় এবং তাকে দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়। এই ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে এবং দেশটিকে বিভক্ত করেছে।
ইউনের অনেক কঠোর সমর্থক তাকে ঘিরে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) হাজার হাজার মানুষ তাকে মুক্তি দিয়ে পুনঃবহাল করার দাবিতে সমাবেশ করেন।
নিয়ম অনুযায়ী, ইউনকে পদ থেকে অপসারণ করা হলে ৬০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রসিকিউটর অফিস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
সারাবাংলা/এনজে