কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের হাতে জাতিসংঘের ১৩ শান্তিরক্ষী নিহত
২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৪ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৩
ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে এম-২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ১৩ সদস্য নিহত হয়েছেন। ২৬ জানুয়ারি বিবিসির প্রচারিত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সশস্ত্র বাহিনী শনিবার (২৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত, এম-২৩ বিদ্রোহীদের সাথে সংঘর্ষে নয়জন দক্ষিণ আফ্রিকান সৈন্য, তিনজন মালাওয়ান এবং একজন উরুগুয়ের নাগরিক নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সেনাবাহিনী জানায়, গোমা শহরের দিকে বিদ্রোহীদের প্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে তাদের সেনারা প্রাণ হারান। এদিকে, জাতিসংঘ কঙ্গোর গোমা শহর থেকে অপ্রয়োজনীয় তাদের কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে। এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষের এই শহরে লড়াই ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার নেতাদের সাথে কথা বলেছেন এবং সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রোববার (২৬ জানুয়ারি) এ বিষয়ে জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এম-২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী কঙ্গোর সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যেই কঙ্গো রুয়ান্ডার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, বিদ্রোহীদের সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলে।
বিদ্রোহীদের হাতে সম্প্রতি এক সামরিক গভর্নর নিহত হওয়ার ঘটনা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জানুয়ারির শুরু থেকে এম-২৩ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর মিনোভা এবং মাসিসি দখল করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা ক্যালাস বিদ্রোহীদের অগ্রগতি থামাতে এবং রুয়ান্ডার সমর্থনের নিন্দা জানিয়েছেন। আফ্রিকান ইউনিয়নের মধ্যস্থতাকারী অ্যাঙ্গোলার প্রেসিডেন্ট জোয়াও লরেনকো বিদ্রোহীদের কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে লড়াই বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বছর সংঘর্ষে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে দখলকৃত এলাকায় ২০০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গোমার হাসপাতালগুলো আহতদের সেবায় হিমশিম খাচ্ছে।
এম-২৩ বিদ্রোহীরা ২০২১ সাল থেকে কঙ্গোর খনিজ সমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা দখল করে রেখেছে। কঙ্গো এবং জাতিসংঘ বলছে, রুয়ান্ডা এ বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে। তবে রুয়ান্ডা এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
বিদ্রোহের পেছনে তুতসি জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি থাকলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রুয়ান্ডা কঙ্গোর খনিজ সম্পদ লুটের উদ্দেশ্যে এম-২৩ কে ব্যবহার করছে।
সারাবাংলা/এনজে