মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচির হুমকি
২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:০৪ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪০
ঢাকা: মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন ১১ থেকে ২০ গ্রেডের চাকুরিজীবীরা। তারা বলছেন, মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে না- বলে সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত সরকার যদি নিয়ে থাকে, তাহলে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন চাকুরিজীবীরা।
সমাবেশ থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার নিশ্চয়তা না পেলে ৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে স্কেল প্রদানে পে কমিশন গঠন ও যে সকল কর্মচারি বেতন স্কেলের শেষ ধাপে চলে গেছেন তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি চলমান রাখার আহবান জানানো হয়।
সমাবেশে সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন বৈষম্যের কথা তুলে ধরে তারা বলেন, গত ১০ বছর ধরে সরকারি কর্মচারিদের বেতন ভাতা বাড়ানো হয় না। কিন্তু দেশের সকল সেক্টরের কর্মচারিদের বেতন বাড়ানো হয়েছে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গত ৭ বছর ধরে বৈষম্যমুক্ত পে-স্কেলের দাবিতে আন্দোলনের পরে বৈষম্যবিরোধী সরকার মহার্ঘ ভাতা প্রদানের কমিটি গঠন করেছে, যার ফলে কর্মচারীরা আশার আলো দেখেছিল। কিন্তু কিছু সুশীল নামধারী লোক এর পিছনে লেগেছে। যেন সরকারি কর্মচারিদের বেতন বাড়ালেই দেশে যত সমস্যা। নিম্ন বেতনভোগীরা কত কষ্ট আছে তা বিবেচনা না করে তারা উপসচিবদের সুযোগ সুবিধার সঙ্গে তুলনা করে কর্মচারিদের বিপক্ষে কথা বলছেন।
১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও সমন্বয়ক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, এখন মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে না। যদি এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে সারা দেশে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা অবিলম্বে বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে স্কেল দেওয়ার জন্য পে কমিশন গঠনের দাবি জানান। একইসঙ্গে যে সকল কর্মচারী বেতন স্কেলের শেষ ধাপে চলে গেছেন তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি চলমান রাখার আহবান জানান।
ফোরামের সভাপতি লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক, সহ-সভাপতি আশফাকুল আশেকীন, ১১-২০ ফোরামের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, অর্থ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান, মো. শাহআলম, ঢাকা বিভাগ সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম সোহাগ, মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন, কেফায়েত হোসেন সোহাগ, সহ-সভাপতি ফজলুর রহমানসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
উল্লেখ্য, বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে মহার্ঘ্যভাতা দেওয়ার ঘোষণা ছিল অন্যতম। যা চলতি জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। মহার্ঘ ভাতা বাস্তবায়ন হলে মূল্যস্ফীতির রাশ টানা যেত না, তাতে সমাজে দেখা দিত বৈষম্য- এই আশঙ্কায় সব মহল থেকে সরকারের এ উদ্যোগ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় মহার্ঘ ভাতা থেকে কিছুটা পিছিয়ে আসে সরকার। তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে নতুন অর্থবছরের বাজেটে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
সারাবাংলা/জেআর/এমপি