মাইকেল মধুসূদনের ২০১তম জন্মবার্ষিকীতে সাগরদাঁড়ীতে মধুমেলার উদ্বোধন
২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:০১ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৪
যশোর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যের অমর রত্ম। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়; বিশ্বে সমাদৃত বলে মন্তব্য করেন যশোরের বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। তিনি আরও বলেন, তার (মাইকেল) যে দেশপ্রেম ছিলো, সেটা বিরল দৃষ্টান্ত। তার উদাহরণ কপোতাক্ষ নদ কবিতা। এই কবিতার মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেছেন, দেশপ্রেমতা কতটা গভীর। তার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্মস্থান যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৭দিন ব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মেলা প্রধান অতিথি উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া অতিথিরা মাইকেল মধুসূদন দত্তের পৈতৃক ভিটায় স্থাপিত কবির আবক্ষ ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এরপর জুলাই বিপ্লব কর্ণার ও কৃষি কর্ণারের উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী দিনেই কয়েকহাজার দর্শক শ্রোতা উপস্থিত থেকে মধুমেলাকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।
জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা জামায়েতে ইসলামী আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান, সাবেক পিপি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান অ্যাড. মোহাম্মদ ইসহক, যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন সহ আরও অনেকে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন।
অনুষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল সংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী । তিনি না আসায় বিভাগীয় কমিশনার প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন।
২৫ জানুয়ারি বাংলা কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক, প্রথম মহাকাব্য ও সনেট রচয়িতা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১ জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও সাগরদাঁড়িতে বসল গ্রামীণ মেলা। মেলায় ঠাঁই পেয়েছে যাত্রা, সার্কাস, যাদু, শিশু বিনোদনের খেলনা, কাপড়. খাবার, কসমেটিক্সসহ বিভিন্ন গ্রামীণ অনুসঙ্গ। তাছাড়া রয়েছে কৃষি মেলাও।
মেলা উপলক্ষ্যে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো মধুভক্তের উপস্থিতিতে এবারও মুখরিত হয়ে উঠেছে কপোতাক্ষ নদের পাড়। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকেই মেলা দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন মানুষ।
মধুপল্লীর কাস্টডিয়ান মো. হাসানুজ্জামান বলেন, মধুমেলা উপলক্ষ্যে মধুপল্লী সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীরা মধুপল্লীতে কবির ভাস্কর্য, প্রসূতিস্থল, কাছারিবাড়ি, স্মৃতি বিজড়িত আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখতে পারবেন।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মধুমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব জাকির হোসেন বলেন, সাগরদাঁড়িতে মধুমঞ্চে ৭ দিনব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীগোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা অংশ নেবেন। এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকেল মধুসূদন পদক প্রদান করা হবে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন ব্যাপক তৎপর রয়েছে। সাতদিন ব্যাপী এ মেলা শেষ হবে আগামি ৩০ জানুয়ারি।
সারাবাংলা/এনজে