পরিচয় মিলেছে ঢাবির শহিদ মিনার এলাকায় ঝুলন্ত ওই মরদেহের
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৩ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:০০
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় একটি মেহগনি গাছে ফাঁস নেওয়া ব্যক্তির পরিচয় অবশেষে শনাক্ত হয়েছে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম আবু সালেহ(৪৫)।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে নিহত সালেহর মরদেহ শনাক্ত করেছেন তার স্বজনরা।
মৃত ব্যক্তির ছোট ভাই আবু রায়হান ছোটন জানান, তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার নগরকসবা গ্রামে। তবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ নয়বাড়ি এলাকায় তাদের নিজেদের বাড়ি আছে। চার ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। এলাকায় একটি টেইলার্সে কাজ করতেন আবু সালেহ। সেখান থেকেই বাজে বন্ধুদের পাল্লায় পরে নেশা করা শুরু করেন। গাজা,ইয়াবার পাশাপাশি শেষ পর্যন্ত প্যাথেডিনও নেওয়া শুরু করেন তিনি।
আবু রায়হান বলেন, গত ২০ বছর যাবৎ নেশায় আসক্ত ছিলেন তার বড় ভাই আবু সালেহ, তবে বাড়িতেই থাকতেন তিনি। তিন বছর যাবৎ বাড়ি ছাড়া হয়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকা শুরু করেন। শেষ গত ৫ দিন আগে বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। ঘটনার দিন চিকিৎসার কথা বলে মা লুৎফুন্নেছার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়ে ভোরে বের হয়ে যান সালেহ। সকালে পুলিশ জানায়, শাহবাগ এলাকায় তার মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে ঢামেকের মর্গে এসে মরদেহ শনাক্ত করে তার পরিবার।
তিনি আরও বলেন, ‘গত সাত থেকে আট বছর আগে নিজের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় সে এবং এই বাড়িতে খারাপ জ্বিন আছে। আবার এলাকার একটি গাছে দড়ি নিয়ে উঠে আত্মহত্যা করতে চাইতেন তিনি। বলতেন মৃত মানুষরা তাকে ডাকছে।’
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি মেহগনি গাছ থেকে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় শাহবাগ থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের ঢামেকের মর্গে পাঠায়।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ হাদিউজ্জামান জানান, সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা খবর পান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিপরীত পাশে ফুটপাতে একটি মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন এক ব্যক্তি। সেখানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস আসলে তাদের সহায়তায় গাছ থেকে মরদেহটি নিচে নামানো হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের মর্গে পাঠানো হয়।
এসআই আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি ভবঘুরে। থাকতেন ওই এলাকার ফুটপাতে। মানসিক সমস্যাও ছিল তার।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের যেকোনো সময় সে ওই মেহগনি গাছের চূড়ায় উঠে গলায় রশি পেচিয়ে ফাঁস দিয়েছেন তিনি।
এসআই বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সিআইডির ক্রাইম সিন হাতের আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। পরে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি মাদকাশক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। পাঁচ বছর যাবৎ তিনি বাড়ির বাইরে থাকতেন। ঢামেকের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসএসআর/এসডব্লিউ