জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল, সংবিধানের উলটো পথে হাঁটছেন ট্রাম্প
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৪ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৫
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর দায়িত্ব নিয়েই অনিবন্ধিত অভিবাসীদের জন্মসূত্রে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্মগত নাগরিকত্ব বাতিল করতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। তবে দেশটির সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সব ব্যক্তিই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে উল্লেখযোগ্য আইনি বাধা অতিক্রম করতে হবে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল স্কুলের অধ্যাপক ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ সাইকৃষ্ণ প্রকাশ বলেন, ‘তিনি এমন কিছু করেছেন যা বহু মানুষকে হতাশ করতে যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে আসলে সিদ্ধান্ত হবে আদালতে।’
তিনি আরও বলেন, এটা এমন কোনো বিষয় নয় যে তিনি নিজের ইচ্ছেয় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
প্রকাশ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ফেডারেল এজেন্সিকে নাগরিকত্বের বিষয়টি আরও সতর্কভাবে ব্যাখ্যা করতে আদেশ দিতে পারেন কিন্তু নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করা হলে যে কেউই আদালতে সেটি চ্যালেঞ্জ করবেন। এটি লম্বা আইনি লড়াইয়ের সূচনা করতে পারে যা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের একটি সংশোধনীর মাধ্যমে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুবিধা বাতিল করা যায়, কিন্তু তার জন্যও দরকার হবে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট এবং তিন চতুর্থাংশ রাজ্যকে সেটি অনুমোদন করতে হবে।’
ইতোমধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত ২২টি অঙ্গরাজ্য ও ২টি শহর। অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এ আইনি লড়াইয়ে শরিক হয়েছে বিভিন্ন নাগরিক অধিকার সংগঠনও।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল ১৮৬৮ সালে, গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর। এই সংশোধনীতে যারা আগে দাস ছিল তাদের নাগরিকত্ব এবং জন্ম সূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টির সমাধান করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট পরে ‘ওয়াং কিম আর্ক বনাম যুক্তরাষ্ট্র’ মামলায় ১৮৯৮ সালে অভিবাসীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নীতির প্রয়োগ নিশ্চিত করে।
এর আগে অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেবেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এমন লাখো অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে।
সারাবাংলা/এইচআই