Wednesday 22 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুই স্ত্রীর বিরোধে ১০ বছর ধরে মর্গে স্বামীর মরদেহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:২১ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৭

প্রতীকী ছবি।

ঢাকা: স্বামীর ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে দুই স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের কারণে ১০ বছর ধরে স্বামীর মরদেহ বারডেমের হিমঘরে পড়ে আছে। স্বামীর ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে দুই স্ত্রীর বিরোধে মামলা নিম্ন আদালত থেকে গড়িয়েছে উচ্চ আদালতে। হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারির পাশাপাশি মরদেহ দাফনের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।

বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।

আদালতে দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মিজানুল হক।

পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, স্বামীর ধর্মীয় পরিচয় নির্ধারণে রুল জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি দাফনের/অসন্তুষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতার ওপর তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ মরদেহের ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমানে (বারডেমের হিমঘরে) যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ব্যবসায়ী রনজিত নন্দি যিনি খোকন নন্দি নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ২৬ জুন বারডেম জেনারেল হাসপাতালে মারা যান।

তার প্রথম স্ত্রী মিরা নন্দি দাবি করেন, স্বামী রনজিত নন্দি—যিনি খোকন নন্দি নামেও পরিচিত জীবনের শেষ পর্যন্ত হিন্দু ছিলেন। রনজিত নন্দির বিভিন্ন সরকারি নথি, যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়কর রিটার্ন, বিদ্যুৎ বিল এবং তার ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যবহৃত হিন্দু নামের তথ্য রয়েছে।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় স্ত্রী হাবিবা আখতার খানম, যিনি উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক। তিনি দাবি করেন, খোকন ১৯৮০ সালের ২ এপ্রিল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালের ১৫ জুলাই তাদের বিয়ে হয়।

বিজ্ঞাপন

তার দাবি, স্বামী রনজিত নন্দিকে ইসলামিক রীতিতে রাজীব চৌধুরী নাম ব্যবহার করে দাফন করা উচিত।

এরপর প্রথম স্ত্রী মিরা নন্দি ২০১৪ সালে রনজিত নন্দি ওরফে খোকন নন্দিকে হিন্দু দাবি করে তার অসন্তুষ্টিক্রিয়া হিন্দু রীতিতে করার দাবি জানিয়ে বিচারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন।

পরে প্রথম স্ত্রী মিরা নন্দি ও দ্বিতীয় স্ত্রী হাবিবা আখতার খানমের মধ্যে স্বামী রনজিত নন্দির দাফন/অসন্তুষ্টিক্রিয়া কোন রীতিতে হবে তা নিয়ে আইনি লড়াই চলতে থাকে।

এরপর ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি বিচারিক আদালত মিরা নন্দির পক্ষে রায় দেন। এবং মৃত রনজিত নন্দি ওরফে খোকনকে মৃত্যুর সময় হিন্দু হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, মৃত রনজিত নন্দি তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম, যেমন গ্রিন রোডে ৫০টি দোকানের একটি ক্যাপিটাল মার্কেট প্রতিষ্ঠা, তার হিন্দু পরিচয় ব্যবহার করেই পরিচালনা করেছিলেন।

পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্ত্রী হাবিবা আখতার হাইকোর্টে আপিল করেন।

মঙ্গলবার বিচারিক আদালতের রায় কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন মরদেহ হাবিবার কাছে হস্তান্তর করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। তিন সপ্তাহের মধ্যে মিরা নন্দিকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন আদালত।

পাশাপাশি বারডেম জেনারেল হাসপাতালকে রনজিত নন্দির মৃতদেহ বর্তমান যে অবস্থায় আগামী তিন মাস একই অবস্থায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এসআর

১০ বছর ধরে মর্গে স্বামীর লাশ দুই স্ত্রীর বিরোধ

বিজ্ঞাপন

নায়িকা রুবিনাকে অপহরণের চেষ্টা!
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৪

আরো

সম্পর্কিত খবর