Wednesday 22 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেটা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকে যা প্রাধান্য পেতে পারে

উজ্জল জিসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:০০ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:৫৮

ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ‍উপদেষ্টা। ফাইল ছবি

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) চার দিনব্যাপী সম্মেলনে অংশ নিতে এরই মধ্যে সুইজারল্যান্ডে পৌঁছেছেন। চার দিনের সফরকালে প্রধান উপদেষ্টার চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি বেঠকে বসতে পারেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার স্টাব, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। তবে সচচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে মেটা প্রেসিডেন্ট (গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স) নিক ক্লেগের সঙ্গে।

বিজ্ঞাপন

কূটনৈতিক সুত্র বলছে, মেটা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে মূল এজেন্ডা আসতে পারে দু’টি বিষয়ে। এর একটি হলো, মেটার বিজনেস হাব অফিস স্থাপিত হয়েছে ভারতের কলকাতায়। বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের সেখান থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে হয়। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ভারতে চলে যায়। অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের ইচ্ছেতেই মূলত ভারতে এটি স্থাপন করা হয়েছিল।

বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট ব্যবসা করেন তাদের প্রত্যেককেই ভারত থেকে ব্যান্ড উইথ কিনতে হয়। কারণ মেটার ডাটা সেন্টার বাংলাদেশে নেই। ভারত সুযোগ বুঝে আগেই বসিয়েছে। আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কখনোই ডাটা সেন্টার বসানোর বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

সুইজারল্যান্ডে মেটা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার বসানোর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এটি হলে পরবর্তী সময়ে আর ভারত থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে হবে না। তখন সরাসরি মেটার কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ কেনা যাবে। এতে বাংলাদেশের অনেক বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর দেশে যেভাবে গুজব ছড়াচ্ছে তাতে রীতিমত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে সরকারকে। মিথ্যা বিষয় ছড়িয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে একটি বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। এই ষড়যন্ত্র দেশে কিংবা বিদেশে থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেশি ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব গুজব বন্ধে ঢাকার মেটা অফিসকে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালনের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

কূটনৈতিক সুত্র জানিয়েছে, মেটা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে চার দিনের সফরে ঠিক কোনদিন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো জানা যায়নি। অন্য একটি সুত্র বলছে, ২৩ জানুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এদিকে প্রেস উইং থেকে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিষয়ে পৃথক ডায়লগের আয়োজন থাকবে। এ ডায়লগের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী নেতাদের কনফিডেন্স বাড়াতে এ সফর সহায়ক হবে মনে করছে সরকার।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। সেই বৈঠকে তিনি দিল্লির পরিবর্তে ঢাকায় ইউরোপের অ্যাম্বাসি খোলার অনুরোধ করেন। কারণ, ইউরোপের বেশিরভাগ অ্যাম্বাসি অফিস ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতেও যেতে পারেনি বাংলাদেশিরা। কারণ, ভারত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বিপদে পড়েন ইউরোপগামীরা। অনেকের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়, কারও কারও ইন্টারভিউ ডেট পার হয়ে যায়। এতে বড়ধরনের লোকসানে পড়তে হয় খাত সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে, ড. ইউনুসের অনুরোধে ইউরোপের বেশিরভাগ অ্যাম্বাসি বা কনসালটেন্সি অফিস ঢাকায় স্থাপন করা হয়েছে। এখন ইউরোপ গমনেচ্ছুদের বেশিরভাগেরই আর দিল্লিতে যেতে হয় না। তারা এখন ঢাকায় বসে ভিসা আবেদন জমা দিতে পারেন।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, ড. ইউনুসের সঙ্গে যদি মেটা প্রেসিডেন্টের ফলপ্রসূ আলোচনা হয় আর ঢাকায় ডাটা সেন্টার স্থাপন করে। সেক্ষেত্রে এ অর্জন হবে সত্যিকার অর্থে বিস্ময়কর অর্জন।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা প্রাধান্য বৈঠক মেটা প্রেসিডেন্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর