‘ইন্টারনেটের দাম আরও কম হওয়া উচিত’
২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫০ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ০০:০৫
ঢাকা: দেশে ইন্টারনেটের দাম আরও কম হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী। তবে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবায় শুল্ক ও ভ্যাট আরোপের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। আর সংস্কার করে টেলিযোগাযোগ আইন গ্রাহক ও বিনিয়োগ বান্ধব করা হবে বলেও জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। টেলিকম আইনের সংষ্কার এনে আগামী মার্চের মধ্যে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিটিআরসির সম্মেলন কক্ষে দেশিয় টেলিকম বিষেজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।
মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সম্পূরক শুল্ক বসানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারের ব্যাপার, এটি রেগুলেটরের (বিটিআরসি) বিষয় নয়। তবে ভ্যাট-ট্যাক্স যতটা কমানো যায়, ততটা কমানো দরকার। রেগুলেটর হিসাবে মনে করি, ইন্টারনেটের দাম আরও কম হওয়া উচিৎ। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, ‘সকাল সন্ধ্যা পালটাতে হয় এমন কোনো নীতিমালা টেলিকম খাতে তৈরি করা হবে না। এই খাতকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। যেখানে মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হবে না।’
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক পুনর্বিন্যাসে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এই কমিটিতে কো অপ্ট করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আজ দেশিয় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সবার সঙ্গে বসে আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করব। সেখানে দেশের সব মানুষের মতামত দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘টেলিকমিউনিকেশন নীতিমালা তৈরি করা হবে, নেটওয়ার্কের বিন্যাসকে পুর্নবিন্যাস করা। প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নের জন্যে রোডম্যাপ তৈরি করা। আমরা গ্রাহক, ব্যবসা ও সরকার তিনটি বিষয়কেই দেখছি। তবে সেবা দেওয়াকে প্রধাান্য দেব। এই সেবাটা দেওয়া যাবে না, যদি ব্যবসাকে সাসটেইন করা না যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের প্রধান বাধা পরিষ্কার ও টেকসই নীতিমালা। বিনিয়োগ করতে গিয়ে তারা আশাবাদী হন না। টেলিযোগাযোগ কমিনিউকেশনের অনেকগুলো লেয়ার আছে। যেখানে মধ্যসত্ত্বভোগী তৈরি হয়েছে। আমরা চাই সাশ্রয়ী সেবা। আমরা এমন নীতিমালা তৈরি করব যেখানে মধ্যসত্ত্বভোগী থাকবে না।’
অপ্রয়োজনী লাইসেন্সগুলো, কিংবা একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক ব্যক্তির লাইসেন্সের বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, এখন মোবাইল ইন্টারনেটের উপর চাপ বেশি। স্পেকট্রামের (তরঙ্গ) ওপর লোড হচ্ছে বেশি। এখনও ৯২ থেকে ৯৩ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট। কারণ ফিক্সড ব্রডব্যান্ডে অনেক বাধা বিপত্তি আছে। সেগুলো কাটাতে হবে। নেটওয়ার্কটি এমন হবে যেখানে নতুন প্রযুক্তি অভিযোজন করার সুযোগ থাকে।
বিটিআরসিরি চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০২৬ সালের শেষ দিকে টেলিকম খাতের অনেকগুলো বড় প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে। এই সময়কে টাইম লাইন ধরে আমরা আমাদের সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করছি। নীতিমালার বিষয়ে আমরা সরকারকে প্রস্তাব দেব।’
ফাইভ জি বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ফাইভ জি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কখন কিভাবে কাজ করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করছি৷ তবে কবে নাগাদ ফাইভ জি চালু করা হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আর আগামী জুনে ৭০০ মেগা হার্জ তরঙ্গের নিলাম অনুষ্ঠিত হবে।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমপি
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি মোবাইল ইন্টারনেট