সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা আগের মতোই হওয়ার শঙ্কা থাকবে: জামায়াত
২০ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৩ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:২৬
ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা আগের মতোই নির্বাচন হওয়ার শঙ্কা থাকবে।
তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার ছাড়া যদি নির্বাচন হয়, তবে আগের মতই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জরুরি সংস্কার করা এবং নির্বাচনি আইন পরিবর্তন করা যেটা নির্বাচনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বেশি অথরিটি দেবে। আমরা সেটার ওপর জোর দিয়েছি।’
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের নির্বাচনি চাহিদা মূল্যায়ন মিশনের সঙ্গে জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাতে শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে জামায়াতের নায়েবে আমির, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের এর নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট এক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের নির্বাচনি চাহিদা মূল্যায়ন মিশন এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। জাতিসংঘ মিশনের পক্ষে ছিলেন সারা পিট্রোপাওলি, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, আদিত্য অধিকারী, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ, নাজিয়া হাশেমি, উপদেষ্টা, ডিজিটাল যুগে অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া (ইউএনডিপি)।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফি-এ বলেন, ‘যে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আমরা স্বাগত করি সহযোগিতার জন্য। তবে প্রভাব বিস্তার করার জন্য নয়। প্রভাব বিস্তার করা ছাড়া যদি আমাদের টেকনিক্যাল এবং ফান্ডিং এর ব্যাপারে সহযোগিতা করে সেটার জন্য আমরা বলেছি আপনাদের স্বাগতম। নির্বাচন বৈধ হওয়ার ব্যাপারে আমরা আরেকটি কথা বলেছি, প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সংযোগ করার জন্য। কারণ সিসি ক্যামেরা থাকলে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে। এখানে প্রচুর ব্যয়ের কথা আসছে। আমরা বলেছি এ ক্ষেত্রে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য এটা বড় ধরনের সহযোগিতা হবে। তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমরা বলেছি, আমরা নীতিগতভাবে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এটা আমাদের মূলনীতির ভেতরেই আছে।’
এরপর তারা বলেছে নির্বাচনের কখন হতে পারে? আমরা বলেছি যত দ্রুত সময়ে দেওয়া সম্ভব। তবে এখানে কিছু জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। জরুরি সংস্কার না করলে নির্বাচন আগের মতই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা বলেছি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রীত্ব কেউ করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এ সকল বিষয়েও সংস্কার হওয়া দরকার বলে আমরা জানিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশন যেসব প্রস্তাব জমা দিয়েছে আমরা মনে করি সেগুলোকে নিয়েই সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনতিবিলম্বে আলোচনা শুরু করা দরকার। পরে কনসেসাস তৈরি করা প্রয়োজন মৌলিক বিষয়গুলোতে। এরপর নির্বাচন শুরু করার জন্য যে সময় দরকার তার ভিত্তিতেই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা দরকার। সুতরাং ন্যূনতম, সম্ভাব্য, প্রয়োজনীয় সংস্কার করেই দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘জনগণ ও পরিবেশ বলবে- পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়। সেখানে পরিস্থিতি এবং জনগণের যে মতামত এবং ম্যান্ডেট থাকবে সেটাই আমাদের অবস্থান। সেখানে আমাদের বিশেষ কোনো নিজস্ব কিছু নেই।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কোনো দলের পক্ষেবিপক্ষে আইনগত বিষয়ে মতামত দিবে না। এটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে, সমাজ সিদ্ধান্ত নেবে, পরিস্থিতি সিদ্ধান্ত নেবে। আগে স্থানীয় সরকার না জাতীয় সরকার নির্বাচন সে বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবজার্ভ করছি। আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো মতামত ঠিক করিনি। আমরা আলোচনা করব এবং তারপর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাব। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা তো একেবারেই আমাদের মৌলিক দাবি।’
সারাবাংলা/জিএস/এইচআই