আরজি করে ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সেই স্বেচ্ছাসেবক, সাজার আদেশ সোমবার
১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৪২ | আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:২২
ভারতে কলকাতার সরকারি আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নারী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক পুলিশ স্বেচ্ছাসেবককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৯ আগষ্টের মর্মান্তিক ঘটনাটি নারীদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে জাতীয় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল।
ধর্ষণের শিকার মৌমিতা দেবনাথের মরদেহ গত ৯ আগস্ট সরকারি আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একটি কক্ষে পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর অন্যান্য চিকিৎসকরা কয়েক সপ্তাহ কাজ বন্ধ রেখে ন্যায়বিচার এবং সরকারি হাসপাতালগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় নভেম্বর মাসে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে বলেন, তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) আদালতেও তিনি একই কথা পুনরায় উল্লেখ করেন।
তার আইনজীবীরা রায়ের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে পারেননি। তবে তারা আদালতে দাবি করেছিলেন, তদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টে বড় ধরনের অসংগতি রয়েছে।
বিচারক অনির্বাণ দাস জানান, উপস্থাপিত প্রমাণ অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করেছে। রায়ের শাস্তি সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঘোষণা করা হবে, যা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
নিহত নারীর বাবা-মা, যাদের নাম ভারতীয় আইনে প্রকাশ করা হয়নি, তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। তাদের দাবি, এই অপরাধ একা একজন ব্যক্তি দ্বারা সংঘটিত হতে পারে না।
নিহতের বাবা বলেন, ‘আমাদের মেয়ে এত ভয়াবহ পরিণতির শিকার একা একজনের হাতে হতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সব অপরাধী শাস্তি না পাচ্ছে, আমরা বেদনা ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব না।’
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এই অপরাধকে বিরল উল্লেখ করে অভিযুক্তের জন্য মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে।
আদালতের বাইরে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক নিহত নারীর প্রতি সংহতি জানিয়ে স্লোগান দেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের মুখপাত্র ডা. অনিকেত মহাতো জানান, ‘ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।’
রায়ের দিন আদালতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০০ এর বেশি সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে পুলিশি পাহাড়ায় আদালতে আনা হয়।
তদন্তে ১২৮ জন সাক্ষী উল্লেখ করা হয়, যাদের মধ্যে ৫১ জনকে বিচার চলাকালে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই মামলার বিচার ১১ নভেম্বর শুরু হয় এবং দ্রুত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনাস্থলের প্রমাণ নষ্ট ও তথ্য বিকৃতির জন্য তখনকার স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং হাসপাতালের তৎকালীন প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন, আর হাসপাতালের সাবেক প্রধান আর্থিক অনিয়মের পৃথক মামলায় আটক রয়েছেন।
সারাবাংলা/এনজে