স্কুল মাঠে ধান-সবজির হাট, পাঠদান ব্যাহত
১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:২১
বগুড়া: বগুড়ার কাহালু উপজেলার দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ধান ও সবজির হাট বসে। এভাবেই চলে আসছে বছরের পর বছর। মাঠে হাট বাসায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। অভিযোগ করেও মিলেছে না প্রতিকার।
কাহালু উপজেলা দূর্গাপুর বাজারে পাশেই দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৫৩ শতাংশ জমির ওপর ১৯৪০ সালে স্থাপিত হয়েছে বিদ্যালয়টি। এতে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী। সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শুক্রবার দূর্গাপুর বাজারে হাট বসে। বাজারের পাশেই বিদ্যালয়ের অবস্থান হওয়ায় মাঠে বসে ধান ও সবজির হাট। সকালে ধানের, বিকেলে সবজির হাট বসায় বিদ্যায়ের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাবহত হচ্ছে যুগ যুগ ধরে।
সাপ্তাহিক হাটের দিন সকাল থেকে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য ধান ও সবজি ভ্যানগাড়ি, ভটভটি করে বিদ্যালয় মাঠে উঠান। বসান বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হৈ চৈ হাক-ডাকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে মনোযোগ হারায়, ধুলাবালু ও ময়লা আবজর্নায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হলেও দেখার যেন কেউ নেই। বিদ্যালয় মাঠে হাট বসার কারণে সমাবেশ, শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা থেকেও শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে।
মঙলবার সকালে দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাঠে বসেছে ধান ও সবজির হাট। স্থানীয় কৃষকরা ভ্যানগাড়ি ও ভটভটি করে ধান ও সবজি বিক্রি করতে হাটে নিয়ে এসেছেন। হাটুরেদের হৈ চৈ এ সরগরম বিদ্যালয় প্রাঙ্গন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে হাটের ইজারাদার ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন আত্নগোপনে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে তার আরেক পার্টনার শ্রী নিতাই চন্দ্র জানান, হাটের জায়গা প্রায় এক একর। কিছু জায়গায় শেড ও পাকা স্থাপনা রয়েছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিদ্যালয় মাঠে বসে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবেই চলে আসছে দূর্গাপুর হাট। তিনি বলছেন বিদ্যালয় মাঠে হাট বসলেও পাঠদানে ক্ষতি হয় না।
অভিভাবকরা জানান, মাঠে হাট বাসায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি। এদিকে, স্কুলের পাশে অবস্থিত শহিদ মিনারের অমর্যাদা হচ্ছে বলেও জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, সকালে ধানের হাট, দুপুরে সবজির হাট বসায় বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করতে তাদের বাধার মুখে পড়েতে হয়। মাঠে খেলাধূলাও করতে পারছেনা তারা। মাঠে মলমূত্র ত্যাগ ও ময়লা আবর্জনার কারণে বিদ্যালয়ে পড়ালেখার পরিবেশ নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের মাঠ সীমানা প্রাচীর দিয়ে গেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবুও বিদ্যালয় মাঠের হাট সরানো যাচ্ছেনা। বিদ্যালয়ের জায়গা সরকারি হওয়া স্বত্বেও ইজারদারদের ঠেকানো যাচ্ছে না। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মুহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয় মাঠে হাট না বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওছার হাবীব (ইউএনও) জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/এসআর
কাহালু উপজেলা দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঠদান ব্যাহত বগুড়া বিদ্যালয় মাঠে হাট