বিচারের আগে আওয়ামী লীগ কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না: রাশেদ খাঁন
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:০২ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৩
ঢাকা: গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেছেন, বিচারের আগে আওয়ামী লীগ কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এ খুনি দলটি বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে।
সেজন্য আওয়ামী লীগসহ সকল লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হবে।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের হয়ে মিছিলটি নাইটিংগেল, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলার মোড়, পল্টন মোড় ঘুরে পুনরায় আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে এসে শেষ হয়।
মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন যে, সরকার বা হাইকোর্টের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ না হলে, তারা নির্বাচনে যেতে পারবে। কিন্তু বিচারের আগে তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে সেটা আমাদের রক্তের উপর দিয়ে করতে হবে।
আওয়ামী লীগকে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মত নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৭১ এর পর শেখ মুজিবের নেতৃত্বে একবার গণহত্যা হয়েছে, ২০২৪ এ তার মেয়ের নেতৃত্বে গণহত্যা।
রাশেদ খাঁন বলেন, পাঁচ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও এখনো আওয়ামী হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারের খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা হওয়া মানে বিচারের নামে প্রহসন করা। আমাদের স্পষ্ট কথা- শেখ হাসিনা ও কাদেরসহ ভারতে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। এদের শাস্তি না হলে শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রাশেদ খান বলেন, ছাত্ররা যে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল, এরই বাংলা অনুবাদ সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছে। তাহলে কি সরকার শুধুমাত্র বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করছে? এখন কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম না। এটাকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রকৃত নেতৃত্ব ও আন্দোলনকারীদের মাইনাস করে কমিটি গঠন হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব নিয়ে হট্টগোল হয়েছে। সুতরাং সরকারকে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করার মাধ্যমে সবার মতামত নিয়েই ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৮৩৪ জন শহিদের গেজেট প্রকাশ করেছে। বাকিদের তালিকা কই? ‘৭১ এর মত কোন বিকৃত ইতিহাস শুনতে চাই না। দ্রুত শহিদের সঠিক তালিকা করুন, শহিদ পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে এবং আহতের ধরণভেদে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঈসমাইল আহমেদ বন্ধন, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল প্রমুখ।
হাসান আল মামুন বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের উপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি যে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা এসেছে ৪৩ তম বিসিএসে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের গেজেটভুক্ত করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে সর্বশেষ যে সকল এসআই প্রশিক্ষণার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাদেরকে রাজনৈতিক কারণে বাদ না দিয়ে তাদের চাকরিতে পূর্ণবহাল করার আহ্বান জানাচ্ছি।
দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, গণহত্যায় জড়িত অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। ছাত্র জনতার জীবনের বিনিময়ে অনেকেই উপদেষ্টা হয়েছেন। অধিকাংশ উপদেষ্টারই গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোন ভূমিকা ছিল না। আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজ করলে, জনগণ কিন্তু আপনাদের পদে রাখবে না।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আরএস