ইউক্রেনে রুশ সেনার পক্ষে যুদ্ধে ১২ ভারতীয় নিহত
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৩৭ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:২৮
ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে নিযুক্ত ১২ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আরও ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মোট ১২৬ ভারতীয় নাগরিক রাশিয়ায় প্রলুব্ধ হয়ে বসবাস শুরু করেন এবং পরে যুদ্ধক্ষেত্রে যান। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি-তে এ তথ্য প্রচারিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রুশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত থাকা ১২৬ ভারতীয়ের মধ্যে ৯৬ জন ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের রুশ সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এখনও ১৮ জন যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৬ জনকে রুশ কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ পর্যন্ত ১২ জন ভারতীয় যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছেন।’
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, রাশিয়ায় অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছে।
দিল্লি থেকে তামিলনাডু পর্যন্ত বিস্তৃত একটি মানব পাচার চক্র, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের রাশিয়ায় চাকরি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রলোভন দেখায়। পরবর্তী সময়ে রাশিয়া পৌঁছানোর পর তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এইভাবে ১২৬ ভারতীয় তাদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়েন। ইতোমধ্যে, ভারতীয় পুলিশ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে একটি ভাইরাল ভিডিওতে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার একদল পুরুষকে সেনা পোশাকে দেখা যায়। তারা দাবি করেন, তাদের প্রতারণার মাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছে এবং তারা ভারতের কাছে সাহায্যের অনুরোধ করেন।
গত বছর জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ভারতীয়দের দ্রুত মুক্তির বিষয়টি উত্থাপন করেন। অক্টোবরে কাজানে অনুষ্ঠিত ১৬তম ব্রিকস সম্মেলনে এই বিষয়ে আবারও আলোচনা হয়। পুতিন আশ্বাস দেন যে, যারা প্রতারণার শিকার হয়ে রুশ সেনায় যোগ দিয়েছেন, তাদের মুক্তি দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘কোনো ভারতীয়কে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো বা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। প্রতারণার শিকারদের জন্য কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এনজে