Friday 17 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্মার্ট চট্টগ্রাম’ গড়তে আইটি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা চান মেয়র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:০৯ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:১১

নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে ‘চট্টগ্রাম আইসিটি ফেয়ার-২০২৫’র সমাপনী অনুষ্ঠানে মেয়র

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামকে ‘স্মার্ট শহর’ হিসেবে গড়ে তুলতে আইটি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে ‘চট্টগ্রাম আইসিটি ফেয়ার-২০২৫’র সমাপনী অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন সম্ভাবনাময় যে খাত সেটা হচ্ছে ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি)। এ খাতকে যদি আমরা বিভিন্নভাবে সামনে আনতে পারি তাহলে একসময় এটাও দেশের জিডিপিতে অবদান রাখতে পারবে। চট্টগ্রামকে আমি স্মার্ট সিটি দেখতে চাই। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘বড় ইভেন্টগুলো চট্টগ্রামে কম হয়। সব ইভেন্ট ঢাকামুখী হয়ে গেছে। এখন বর্তমান যুগ রোবোটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের দিকে যাচ্ছে। পুরো পৃথিবী কিন্তু সেদিকে যাচ্ছে, আর আমরাও যাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম নগরীকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে জানিয়ে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ চট্টগ্রামকে একটা স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ইন্টারনেট ক্যাবলগুলো মাটির নিচে নিয়ে যেতে আমার সঙ্গে তিন থেকে চারটি কোম্পানি দেখা করেছে। গতকালও (বৃহস্পতিবার) তারা এসেছে। আমি দীর্ঘক্ষণ তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’

‘সামিট গ্রুপ, বাহনসহ তিনটি কোম্পানি এসেছে। তারা আগেও প্রপোজাল দিয়েছিলেন। পরীক্ষামূলকভাবে আপনারা তিনটি কোম্পানি দু-তিনটি ওয়ার্ডকে টার্গেট করেন। যাদের কাজ ভালো হবে অবশ্যই আমি তাদের সঙ্গে কাজ করব। কোয়ালিটির একটি প্যাটার্ন যাতে চট্টগ্রামের এ এক্টিভিটির মধ্যে থাকে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নাজুক জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রবলেম গত ১৬ বছর ধরে হয়েছে। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি হয়েছে। দিনশেষে বাংলাদেশ থেকে ২৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। আমাদের তরুণরা তাদের সে বিনিয়োগের সোর্স সেটা খুঁজে পাচ্ছে না। সবমিলিয়ে আমাদের বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই নাজুক।’

চট্টগ্রামে আরও বেশি তথ্যপ্রযুক্তি মেলা হওয়া উচিত জানিয়ে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘চট্টগ্রামে আরও বেশি আইটি ফেয়ার দরকার। আপনারা করুন। আমার পক্ষ থেকে যতটুক সহযোগিতা করা দরকার আমি করব।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক ও সেক্রেটারি নাজমুল করিম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের সভাপতি আমিনুল হক, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে কার্যনির্বাহীর সদস্য তারিকুল ইসলাম তানভীর ও আইএসপিএবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদস্য সচিব ফারহান ফুয়াদ।

সমাপনী অনুষ্ঠানের আগে শুক্রবার বিকেলে মেলা পরিদর্শনে যান তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি বেশ কয়েকটি স্টল ঘুরে মেলার সার্বিক চিত্র দেখেন।

মেলা পরিদর্শনে যান তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী (ছবির বাম পাশে)

এ ধরনের ইভেন্ট বছরে তিন-চারবার আয়োজনের পক্ষে মত দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আইএসপিএবি প্রতিবছর এরকম একটা ইভেন্ট করে থাকে। প্রতিবছরই প্রোগ্রামটা খুবই উৎসবমুখর হয়। ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো নতুন বছরের শুরুতে তাদের নতুন টেকনোলজি, প্যাকেজ কিংবা অফার সম্পর্কে মানুষকে জানানোর সুযোগ পায়। মানুষও স্বাভাবিকভাবে তাদের আগ্রহের বিষয়গুলো জানতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

‘এ ধরনের আয়োজন গত দুই-তিন বছর ধরে হচ্ছে। মেলার পাশাপাশি বিতর্ক-সেমিনকরসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম এখানে হয়। সেখানে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী অংশ নেন। তারা আইটি সেক্টর নিয়ে অনেক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে। এটা অনেক ভালো একটি বিষয়। এ জন্য তাদের মধ্যে এ ইভেন্ট নিয়ে অনেক বেশি উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে। আমি মনে করি, এটা বছরে তিন-চারবার করা উচিৎ। তাহলে মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা আরও বাড়বে,’ – বলেন সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী।

মেলার সমাপনী দিনে সকালে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কুইজ অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগিতায় নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুজন করে শিক্ষার্থী কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

মেলার সমাপনী দিনে সকালে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কুইজ অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে

এতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আর রানার্স আপ হয়েছেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা অন্য সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো- চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটোরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম।

সকাল থেকে বিভিন্ন স্টলে প্রচুর দশনার্থীর উপস্থিতি ছিল। এদিন দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বিভিন্ন কোম্পানি। নানা বয়সী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর ছিল পুরো আয়োজন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী সাধারণ দর্শনার্থী, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ মেলা প্রাঙ্গনজুড়ে স্টলগুলোতে ঘুরে ঘুরে ইন্টারনেট সংযোগ কিংবা আইটি খাতের নানা বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজেছেন।

চট্টগ্রামে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত এ মেলায় দেশের অন্যতম শীর্ষ অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা.নেটসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্পন্সর হিসেবে ছিল।

সারাবাংলা/আইসি/এইচআই

চট্রগ্রাম সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী সারাবাংলা.নেট স্মার্ট চট্টগ্রাম