রাজধানীতে সবজির বাজারে স্বস্তি, লাগামহীন মাছের বাজার
১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৫৪ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৯
ঢাকা: চলছে শীতকাল। তাই টাটকা সবজিতে ভরপুর রাজধানীর বাজারগুলো। তবে সবজি ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও লাগামহীন মাছ ও মাংসের বাজার। আর আগের মতোই চড়া রয়েছে চালের বাজার। সেইসঙ্গে ফের দেখা দিয়েছে সয়াবিন তেলের সংকট। এছাড়া কিছু নিত্যপণ্যের দামও বেশ চড়া। বাজারে দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাসে নগরবাসী।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর-৬ বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
মাছের বাজার গত সপ্তাহের বেশ চেয়ে চড়া। কেজিতে প্রায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে সব ধরণের মাছের দাম।
আকারভেদে বিভিন্ন মাছের দামে রয়েছে বেশ পার্থক্য। প্রতিকেজি পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০, চাষের কই ৩০০ থেকে ৩২০, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০, শিং (ছোট) ৪২০ থেকে ৪৫০, কাঁচকি গুঁড়া ৪০০ থেকে ৪২০, বোয়াল ৮০০ থেকে ১৩০০, ট্যাংরা ৮০০, গোলশা মাছ প্রতিকেজি ১০০০, রুই ৪৫০ থেকে ৫৫০, রুপচাঁদা ১১৫০, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ছোট থেকে মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১২০০ টাকায়। আর বড় ১ বা ২ কেজির ইলিশ কিনতে গুনতে হবে ৩ হাজার টাকা।
সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা ক্রেতাদের অনেকের মাঝেই চিন্তার ভাঁজ, মাসিক বাজারের বাজেট এ মাসে ঠিক থাকবে তো! কেননা নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছু কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। মাছের ক্রেতা মোহাম্মদ আব্দুর রউফ জানালেন, মাছের বাজারে চাষের মাছ বেশি থাকলেও নদীর মাছ কম। আর যা আছে তার দামটাও অনেক বেশি। এতে করে পরিবারের আমিষের ঘাটতি পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা শামীম আহমেদ জানালেন, মাসের বাজারের বাজেট এ মাসে ঠিক থাকবে কিনা, সে ভাবনা থেকে মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এখন মাছ কেনাটাও কমিয়ে দেয়ার কথা ভাবছেন তিনি। বললেন এভাবে কাটছাট করে মাসের বাজার বেতনের মাঝে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
মাছের বিক্রেতা শফিক হাওলাদার বলেন, মাছের ঘাটগুলোতেই দাম বাড়তি দিয়ে আনতে হচ্ছে তাই সরবরাহ বেশি থাকলেও দাম বেশি।
এদিকে বাড়তি মুরগির বাজার। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা দরে। কবুতর ৩০০ টাকা জোরা, প্রতি কেজি হাঁস ৪৫০ টাকা। তবে আগের সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কক মুরগি ২৩০ থেকে ২৫০, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
গেলো সপ্তাহের মতোই ৭৫০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১১৫০ টাকায়।
তবে বাজারে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে শীতকালীন সব সবজির দাম।
প্রতিকেজি গোল ও লম্বা বেগুন আগের মতো ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি মুলা ২০ টাকা, পেঁপে ও শালগম ৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১৫-৩০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৪০-৫০ টাকা, কলার হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৬০-৮০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, শসা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লালশাক, পালং, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে। আলু ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের মতোই চড়া চালের বাজার। প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৮০-৯০ টাকা, মানভেদে মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৬০-৬৫ টাকায়, মোটা চাল (গুটিস্বর্ণা) ৫৫-৫৮ টাকা, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৪-৯৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/এনএল/এনজে