পরিবেশ রক্ষায় প্রতিবন্ধক আমলারাই, বন্ধু হচ্ছে জনগণ: বাপা
১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৫ | আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৪
ঢাকা: বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সরকারের ভুল নীতির সমালোচনা করে এবং সঠিক নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহায়তা করে থাকে। পরিবেশ রক্ষা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। জনগণের সহায়তা নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। কিন্তু সরকারের ভেতরে সরকার আছে। আর সে সরকার হচ্ছেন আমলারা। সরকার সিন্ধান্ত দিলে পরিবেশ রক্ষায় আমলারাই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। গত ২৫ বছর ধরে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে বাপা আমলাদের শত্রু হিসেবে পেয়েছে, আর বন্ধু হিসেবে পেয়েছে জনগণকে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বাপা নেতারা এসব মন্তব্য করেন।
সংগঠনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১৭-১৮ জানুয়ারী ঢাকায় দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শেরে বাংলা কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়মে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলন উদ্ধোধন করবেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। সম্মেলনে দেশের রাজনীতিবদসহ সকল পর্যায়ের প্রতিনিধিদের পরামর্শ নিয়ে পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাপা সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, বৈশ্বিক সমন্বয়ক ড. খালেকুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, মিহির বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সহজ নয়। বাপাকে অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। জনগণের সহায়তায় রাজপথে কালো ধোঁয়ার গাড়ি চলাচল বন্ধ, পলিথিন ব্যাগ বন্ধে আইন প্রনয়ণ করা, নদ-নদী রক্ষায় নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও ১২টি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাপা’র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, নদ নদী রক্ষার জন্য আমরা যা চেয়েছি, তা হয়নি। যাতায়াত ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে পারি নি। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রেও আমাদের উল্লেখযোগ্য সফলতা নেই। তবে বাপা’র আগামী পথচলায় আমরা সরকারের সহায়তা ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সফলতা অর্জনের প্রত্যাশা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাপা একটি সেচ্ছাসেবক সংগঠন। আজ থেকে ২৫ বছর আগে সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) গঠিত হয়েছিল। এখানে কোন দাতাগোষ্ঠীর কাজ থেকে সহায়তা নেওয়া হয় না। স্বঅর্থায়ন এবং স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এবং স্বদেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের যৌথ উদ্যোগে গঠিত বাপা একটি অন্যন্য সংগঠন। বাপা পরিবেশ সমস্যার সমাধানে জ্ঞান এবং সামাজিক সক্রিয়তার সম্মিলনের উপর জোর দেয়। বাপা দলীয় রাজনীতি পরিহার করে, কিন্তু পরিবেশ সমস্যার সমাধানে সকল রাজনৈতিক দলকে উৎসাহিত করে।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনের বিষয়ে বলা হয়, সম্মেলনে বাপা’র ২৫ বছরের কর্মকান্ডের পর্যালোচনা করা হবে এবং ভবিষ্যত লক্ষ্য ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। সংগঠনের কর্মকান্ড মূলত দুই ধারায় অগ্রসর হয়েছে। একটি হল- পরিবেশ সমস্যা নিয়ে গবেষণা ও সুপারিশ প্রণয়ন। অন্যটি হচ্ছে- আন্দোলন, যার মাধ্যমে বিভিন্ন সুপারিশ গৃহীত ও বাস্তবায়িত হয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আরএস