Tuesday 14 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১০ ট্রাক অস্ত্র আইনের মামলায় বাবর খালাস, মুক্তিতে বাধা নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:২৩ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৮

লুৎফুজ্জামান বাবর। ফাইল ছবি

ঢাকা: চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ ছাড়া ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াকে ১৪ বছর এবং চার আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর মামলা চলাকালে মৃত্যু হওয়ায় চার আসামির ক্ষেত্রে মামলাটি অকার্যকর ঘোষণা করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

এ মামলায় অস্ত্র আইনের ১৯(ক) ধারায় ১৪ আসামিকে যাবজ্জীবন এবং ১৯(চ) ধারায় সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। এ রায়ের ফলে বাবরের কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

বাবর ছাড়া অন্য যে চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন তালুকদার, ইউএফএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ কে এম এনামুল হক, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নুরুল আমীন।

আর এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ, এনএসআইয়ের সাবেক উপপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআইয়ের সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান ও চোরাকারবারী হাফিজুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যু হওয়ায় এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক আব্দুর রহিম, জামায়াতের সাবেক আমীর মতিউর রহমান নিজামী, চোরাকারবারী দীন মোহাম্মদ ও চোরাকারবারিদের সহযোগী হাজি আবদুস সোবহানের আপিল অকার্যকর ঘোষণা করে তা বাতিল করেছেন উচ্চ আদালত।

বিজ্ঞাপন

আদালতে আপিলের পক্ষে শুনানি করেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান।

রায়র পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরকে ৭৮ রিমান্ডে নিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জড়িয়ে জবানবন্দি দিতে। এই জবানবন্দি দিলে তাকে (বাবরকে) আসামি না করে সাক্ষী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৭৮ দিন রিমান্ডে থাকার পরও তিনি এই জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। যে কারণে তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়।

শিশির মনির বলেন, আদালত আজকেই একটি অ্যাডভান্স (সংক্ষিপ্ত) আদেশ দিবেন। আশা করছি আজকেই এই আদেশ বাস্তবায়ন হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি জেল থেকে মুক্তি পাবেন।

বাবর বর্তমানে কেরাণীগঞ্জ কারাগারে আছেন। আদেশ যথাসময়ে পৌঁছার পর তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, যাবজ্জীবন থেকে কমিয়ে যে চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তারা ইতোমধ্যে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন। ফলে এই চারজনেরও কারামুক্তিতে বাধা থাকবে না।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।

এর আগে সবশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছিলেন বাবর।

বিএনপির এই নেতা দুর্নীতি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের (দুই মামলা) মামলায় কারাদণ্ড হয়েছিল।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন। সেই থেকে কারাবন্দী তিনি। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। যার মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড, একটিতে যাবজ্জীবন দণ্ড হয়।

এর মধ্যে ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় আট বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। সবশেষ ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান তিনি।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

লুৎফুজ্জামান বাবর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর