‘তাবলিগে জোবায়েরপন্থি বলে কিছু নেই, সঠিক শব্দ শুরায়ী নেজাম’
১২ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৬
ঢাকা: দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত পরামর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। সারা পৃথিবীতে এখন যে সংকট দেখা দিয়েছে তা এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে। উনি হঠাৎ নিজেকে আমির দাবি করেন। যার নাম মাওলানা সাদ। তাকে যারা অনুসরণ করে তাদেরকে সাদপন্থি বলা হয় বলে জানিয়েছেন তাবলিগের মিডিয়া বিভাগের প্রধান হাবিবুল্লাহ রায়হান।
আরেকটি জামাত আলমী শুরার তত্ত্বাবধানে সারা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতে তাবলিগের কাজ করছেন, তাদেরকে কোথাও জোবায়েরপন্থি বলা হয় না, তাদেরকে শুরায়ী নেজাম বলা হয়। ‘জোবায়ের পন্থি’ একটি ভুল শব্দ। যা শুধু বাংলাদেশেই চালু হয়ে গিয়েছিল। এবং এদেশের সাদের অনুসারীরাই এই শব্দটাকে ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের সামনে বারবার এনেছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘আমরা মাওলানা জোবায়েরকে এককভাবে অনুসরণ করি না। যে কারণে আমাদেরকে কেউ বলতে পারে না জোবায়েরপন্থি। আমরা একটা জামাত অথবা একটা কমিটিকে অনুসরণ করি। যাদেরকে তাবলিগের ভাষায় শুরা বলা হয়। ওই শুরার ভেতরে মাওলানা জোবায়ের একজন মাত্র। দুনিয়ায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আলমী শুরা রয়েছে।’
হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ‘১৯৯৫ সালে সমস্ত দেশের তাবলিগের মুরুব্বিরা মিলে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, দাওয়াত ও তাবলিগের এই মেহনত এখন থেকে একক আমিরের পরিবর্তে শুরায়ী নেজামের অধীনে পরিচালিত হবে। ১০ জনের একটি শুরার জামাত গঠন করা হয়, তখন মাওলানা সাদও ছিলেন। হঠাৎ করেই ২০১৭ সালে মাওলানা সাদ নিজেকে আমির হিসেবে ঘোষণা করেন। তাকে কেন্দ্র করে কিছু লোক তাবলিগের মূল মেহনত থেকে আলাদা হয়ে যান। যারা বর্তমানে সাদপন্থি হিসেবে পরিচিত।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘মাওলানা সাদ কোরআন সুন্নাহবিরোধী একাধিক বক্তব্য দেন। যার মধ্যে নবীগণ ও সাহাবিদের দোষ চর্চা করা অন্যতম। এহেন পরিস্থিতিতে দারুল উলুম দেওবন্দ মাওলানা সাদের ব্যাপারে ফতোয়া দেওয়া শুরু করেন মাওলানা সাদের ফিকরি বে-রাহরবি। এখন পর্যন্ত দারুল উলুম দেওবন্দ মাওলানা সাদের ব্যাপারে আস্থা আনতে পারেননি। আবার মাওলানা সাদ তার ভুল বয়ানের জন্য ক্ষমা চাইলেও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানে একই বয়ানের পুনরাবৃত্তি করেন।’
রায়হান আরও জানান, সাদপন্থিরা দীর্ঘ ১৭ বছর শুরায়ী নেজামের অধীনে থেকে মেহনত করছিল। হঠাৎ করে মাওলানা সাদ যখন নিজেকে আমির ঘোষণা করেন, তখন তারা তাবলিগের মূল মেহনত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা কার্যক্রম শুরু করেন।
মূল বক্তব্য হলো, ‘আমরা একটা জামাত বা শুরাকে মানছি। যে কারণে আমাদের শুরায়ী নিজাম বলা হয়। কিন্তু জোবায়েরপন্থি বলা ভুল। এখন বিভিন্ন সরকারি প্রজ্ঞাপনেও আমাদের এই ভুল শব্দটা সংশোধিত হয়ে সঠিক শব্দ শুরায়ী নেজাম লেখা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম