সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিনের বরখাস্তের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট
১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৫
ঢাকা: সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। তাজকিন আহমেদ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সদস্যসচিব।
রোববার (১২ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
তিনি জানান, মোট তিনটি গেজেট ইস্যু করা হয়। প্রথমটিতে মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় প্যানেল মেয়রকে-১ প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং তৃতীয় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ৩৩(২) ধারা অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য সচিব নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। এ তিনটি গেজেট তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। ফলে তাজকিন আহমেদের দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা নেই।
এর আগে ২০২৩ সালে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের পদটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গেজেট স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রুল জারি করা হয়। গেজেট চ্যালেঞ্জ করে তাজকিন আহমেদের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া এবং বিধি বহির্ভূতভাবে পৌরসভার ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার সংলগ্ন জমিতে মার্কেট নির্মাণের দরপত্র আহ্বানসহ ১০ দফা অভিযোগ উল্লেখ করে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১২ কাউন্সিলর গত আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন।
ডিসি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পালকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ মতো তিনি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদকে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’-এর পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যধারা কেন নেওয়া হবে না মর্মে এই চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাজকিন আহমেদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের চিঠির জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দেওয়ায় কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানকে (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কিত সভা ডাকার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর বিকেলে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিষদ কক্ষে ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানের সভাপতিত্বে সভায় ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ১১ জনই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ওই সভায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর–১ শাখার উপসচিব আব্দুর রহমান সই করা এক প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ