‘নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সরকার কাজ করছে’
১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৯ | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪০
ঢাকা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শিগগিরই একটা রোডম্যাপ আসবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সরকার কাজ করছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে এনআরবি আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ: এনআরবি অ্যান্ড ইউ এন পিসকিপারস লিডিং দ্য ওয়ে’ শীর্ষক ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিয়েও কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে।’ এমন দল কয়েকটি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর শাখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পৃথিবীর কোনো রাজনৈতিক দলের এতো শাখা, কর্মী নাই। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াত, ক্ষেত্র বিশেষ জাতীয় পার্টির শাখা সারা বিশ্বে আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে দুই দল, তিন দল প্রচণ্ড শত্রুভাবাপন্ন, তাদের শাখাগুলোর প্রবাসীরাও একইরকম শত্রুভাবাপন্ন।
সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কেউ একজন বিদেশ যায় আর তাকে ডিম ছোড়ার জন্য বা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার জন্য অসংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে, এমন দৃশ্য কেউ কি দেখেছেন? ইস্যুভিত্তিক না, স্রেফ ব্যক্তি এবং দলভিত্তিক যে প্রতিক্রিয়া হয়, এটা বিরাট ক্ষতি করছে আমাদের ইমেজের ক্ষেত্রে এবং আমাদের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও।
ভারতের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী কোথাও গেলে সেখানে দুয়োধ্বনি দেওয়ার জন্য কেউ দাঁড়িয়ে থাকে না। আমাদের এখানে হয়। এটা চিরদিন হয়ে আসছে। এটা থেকে আমাদের বের হতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভারতীয়রা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, আমরা পাই না কেন? কারণ আমরা স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হই খুব কম।
বিদেশের মাটিতে একে অপরকে শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান তিনি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা কেটে যাবে। তাহলে বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে আসবে।’
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যম ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা এমন তথ্য প্রচার করছে, যাতে মনে হচ্ছে সীমান্তে যুদ্ধাপরিস্থিতি বিরাজ করছে, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে। ভারতীয়দের অপপ্রচার রোধে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এনআরবিদের ভূমিকা বিশ্বে ইতিবাচক, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচকও আছে। সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। একজন ট্যাক্সিচালকের গাড়িতে ভুল করে কেউ যদি বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেলে রেখে যায় এবং তিনি সেটা তার মালিককে খুঁজে বের করে ফেরত দেন– এই ঘটনা কিন্তু ইমেজ অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু যখন দেখা যায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে যারা মারা যায় কিংবা উদ্ধার হয় তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ বাংলাদেশের, তখন ইমেজ নষ্ট হয়। এ বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে।
সারাবাংলা/জেআর/ এইচআই