Saturday 11 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ
প্রকল্প ব্যয় ২৬ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব, মেয়াদ ২ বছর

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:০০ | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ০২:৪৫

আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প। প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বিগত সরকার আমলে গৃহীত ‘জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজে গতি নেই। গত তিন বছরের প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬ দশমিক ২১ শতাংশ। এ অবস্থায় ২৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। একইসঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ আরও ২ বছর বাড়ছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১ হাজার ১০৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং প্রথম দফায় ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ১ বছর বাড়ানোর পর এটি সদ্য সমাপ্ত গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

বিজ্ঞাপন

সূত্র মতে, প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ১৩০ কোটি ২৭ লাখ ১১ লাখ টাকা নির্ধারণ এবং প্রকল্পের মেয়াদকাল আরও ২ বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল প্রস্তাবে প্রকল্পটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ১ বছর বাড়ানো হয় (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত)।

সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হয়নি এবং প্রকল্প সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। মূল প্রস্তাবে প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল গণপূর্ত অধিদফতরের ২০১৮ সালের রেট শিডিউল অনুযায়ী। এরমধ্যে ২০২২ সালের রেট শিডিউল প্রণিত হয়েছে। এসব কারণে ২০১৮ সালের গণপূর্ত অধিদফতরের রেট শিডিউলের চেয়ে ২০২২ সালের রেট শিডিউলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্মাণ সংক্রান্ত ব্যয়ের বৃদ্ধি বা কম হয়েছে। সামগ্রিকভাবে কিছু ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য প্রকল্পের প্রথম সংশোধন প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

সংশোধনী প্রস্তাবে আরও বলা হয়, প্রকল্পের জমি বা সাইট চূড়ান্ত করার বিষয়ে সুপারিশ দেওয়ার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর অতিরিক্ত সচিবকে (উন্নয়ন) সভাপতি করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা প্রকল্পের আওতাধীন জেলা গুলোর জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে জমির সাইট চূড়ান্ত করার সুপারিশ করার পরে জমির চূড়ান্ত অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে। স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭ অনুযায়ী নির্ধারিত অধিগ্রহণ মূল্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য সাইট চূড়ান্ত করাসহ জমি অধিগ্রহণের সুপারিশ করা হয়। সাইট চূড়ান্ত করা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ১৩ জেলায় প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। অবশিষ্ট ১৩ জেলার জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া একটি জেলায় (ঝিনাইদহ) জমি নিয়ে মামলা আছে এবং ৩টি জেলায় চট্টগ্রাম,খুলনা বেতার ও কক্সবাজার গণপূর্ত অধিদপ্তর জমির দখল পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে সংশোধিত প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) রেহেনা পারভীন সারাবাংলাকে বলেন, “এ মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। সেখানে দেখবো কী কারণে প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি এতো কম। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, পাবলিক রিলেশন্স ডাইরেক্টরেটরের সঙ্গে বাংলাদেশ পরিষদ ও ব্যুরো অব ন্যাশনাল রিকনস্ট্রাকশন শাখাকে একত্রিত করে ১৯৭২ সালের ২ অক্টোবর গণযোগাযোগ অধিদফতর প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে ১৯২৪ সালে কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিংয়ে তথ্য অধিদফতরের অধীনে পাবলিসিটি ডিপার্টমেন্ট নামে এ দফতর প্রথমে যাত্রা শুরু করে। ১৯৪১ সালে দফতরটি পল্লী গীতি নামে একটি বিভাগ চালু করে। এ দফতরের নানা ধরনের যানবাহন রয়েছে। যেমন- মোটর লঞ্চ , উইলিস জীপ , সুপার শার্ক স্পীড বোট, জজ ভ্যান, ল্যান্ডরোভার , এডিও জীপ শেভ্রলেট পিকআপ ইত্যাদি। বর্তমানে দফতরের কাজের পরিধি এবং কাজের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি বাড়লেও এই সংবেদনশীল যানবাহনগুলো এখন আর দেখা যায় না।

স্বাধীনতার পর এই অধিদফতর তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জনপ্রিয় গণযোগাযোগ যন্ত্র এবং কলাকৌশলের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ, শিক্ষিত এবং প্রেরণা জোগানের কার্যক্রম শুরু করে। গতানুগতিকভাবে গণযোগাযোগ অধিদফতর একটি জনসংযোগ সংস্থা যা সরকারের চোখ, কান এবং মুখপাত্র হিসেবে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দুর্নীতি বিরোধী প্রচার, তথ্য অধিকার, জনসেবার অধিকার, নাগরিক দায়বদ্ধতা জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা ইত্যাদির মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে।

তবে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় প্রচার কার্যক্রমের জটিলতা ও বৈচিত্র্য এবং বর্তমানে এর সঙ্গে বিদ্যমান অবকাঠামোগত সুবিধা অত্যন্ত অপ্রতুল, যা আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন ও সনাতন বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

এ অধিদফতরের উদ্দেশ্য হচ্ছে- সরকারের নীতি, কর্মসূচি এবং কার্যাবলী প্রত্যক্ষ সংযোগ এবং আন্ত:ব্যক্তিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। গণযোগাযোগ অন্যান্য মাধ্যম যেমন টেলিভিশন এবং রেডিও থেকে পৃথক হয়েও জনগণের সমস্যা ও মতামত সঠিক নীতি নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সারা দেশের সিনেমা হলগুলো পরিদর্শন করার দায়িত্বও এই সংস্থার হাতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিভিন্ন কারণে এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিনেমা হল এবং এর দর্শকের সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। চলচ্চিত্র শিল্প পারিবারিক বিনোদন দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক বার্তাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার চাহিদা হারাচ্ছে। বিনোদন এবং বার্তা জনগণের কাছে প্রচার করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্র। তাই চলচ্চিত্র মাধ্যমকে পুনরুজ্জীবিত করতে প্রয়োজনীয় সব ডিজিটাল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা ও সুবিধাগুলোকে নিশ্চিত করার জন্য সফলভাবে সামাজিক মূল্যবোধ এবং মানসম্মত বিনোদনকে পাশাপাশি স্থাপন এবং একত্রিত করতে যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে। এজন্য ডিজিটাল চলচ্চিত্র প্রদর্শনে ডিজিটাল সিনেমা হল নির্মাণ এবং জনগণ ও দর্শককে আধুনিক যুগের ডিজিটাল বিনোদনের পরিবেশ, সর্বশেষ তথ্যের প্রবেশাধিকার স্মরণ করানো জরুরী।

বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন সবচেয়ে বড় দফতর হিসেবে গণযোগাযোগ অধিদফতর তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের জন্য কাজ করছে। নিয়মিত প্রচার প্রচারণার অংশ হিসাবে গণযোগাযোগ অধিদফতর ইউএনএফপিএ. ইউনিসেফ, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা (ভিএডব্লিউ), যারা নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করছে, এইডস, ডিজিটাল বাংলাদেশ, এটুআই গভর্নেন্স ইত্যাদি প্রকল্প বাস্তকবায়নে কাজ করছে। এটি তথ্য অধিকার (আরটিআই) নিয়েও কাজ করছে।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প ব্যয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর