অর্থপাচার, দুর্নীতি, প্রতারণার অভিযোগ
মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়ে প্রত্যাখ্যাত তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী-কন্যা
১০ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪১ | আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪৫
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক ও মেয়ে বুশরা সিদ্দিক মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করলেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। অর্থপাচার, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষের অভিযোগ থাকায় তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মাল্টা কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন এ তথ্য জানানো হয়। ফাঁস হওয়া নথিপত্রের বরাতে প্রতিবেদনটি করেছে গণমাধ্যমটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নাগরিকত্ব চেয়ে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দুই দফায় আবেদন করেছিলেন যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের চাচি শাহীন সিদ্দিক। ২০১৫ সালে মায়ের সঙ্গে মেয়ে বুশরা সিদ্দিকও মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়েছিলেন ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি জমি অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ উঠেছিল একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শাহীন সিদ্দিকের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তার মাল্টার পাসপোর্টের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
শাহীন সিদ্দিক সংশ্লিষ্ট যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে, সেটির নাম প্রচ্ছায়া। শাহীন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপারসন ছিলেন। প্রচ্ছায়ায় নিজের পদের বিষয়টি ২০১৩ সালে মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদনেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
২০১১ সালের নথি অনুযায়ী, ওই সময় বুশরা প্রচ্ছায়ার পরিচালক ছিলেন। তবে ২০১৫ সালে মাল্টার যৌথ নাগরিকত্ব আবেদনের সময় প্রচ্ছায়ার কথা উল্লেখ করেননি শাহীন সিদ্দিক। এর বদলে চট্টগ্রামের দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেডকে নিজের প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন তিনি।
নথিপত্রে দেখা গেছে, ২০১৩–এর পর ২০১৫ সালের মার্চে মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের সঙ্গে যৌথভাবে মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন শাহীন সিদ্দিক। সেবার নাগরিকত্বের জন্য শাহীনকে খরচ করতে হতো ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো। আর বুশরার খরচ পড়ত ২৫ হাজার ইউরো। এ ছাড়া ফি বাবদ হেনলি অ্যান্ড পার্টনারসকে দিতে হতো ৭০ হাজার ইউরো।
২০১৫ সালে মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের তথ্য (স্টেটমেন্ট) দেখান শাহীন। তাতে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার জমা দেখানো হয়। আগের দুই মাসে ১১টি লেনদের মাধ্যমে ওই অর্থ হিসাবটিতে জমা দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই অর্থের কোনো উৎসের কথা নথিতে জানানো হয়নি।
২০১৫ সালের শেষের দিকের ফাঁস হওয়া নথিপত্রে দেখা গেছে, ‘আবেদন খারিজ অথবা বাতিল’ শিরোনামে একটি তালিকায় শাহীন সিদ্দিকের নাম রয়েছে। মাল্টার সরকারি প্রজ্ঞাপন থেকেও নিশ্চিত হওয়া গেছে যে শাহীন সিদ্দিক বা বুশরা সিদ্দিক—কেউই দেশটির নাগরিকত্ব পাননি। তারা যে পাসপোর্ট পাননি, তা নিশ্চিত করেছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনারসও।
বুশরা ও শাহীন সিদ্দিকের সঙ্গে মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদনের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করেছিল ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। তবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/এইচআই
তারিক সিদ্দিক মাল্টার নাগরিকত্ব শাহীন সিদ্দিক শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা