Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লঘুচাপ নিয়ে আসছে শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ ডিগ্রিতে

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১৩

ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা মেলেনি, তবুও কাজে ছুটছেন কৃষক। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বর্ষপুঞ্জি অনুযায়ী এখন বাংলাদেশে শীতকাল। রাজধানী ঢাকায় শীতের উপস্থিতি এতদিন তীব্রভাবে না পাওয়া গেলেও বুধবার (৮ জানুয়ারি) হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। ফলে এদিন যে শীত অনুভূত হয়েছে, তা গত এক মাসেও পায়নি নগরবাসী। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দেশজুড়ে ফের হাড় কাঁপানো শীত আসছে। তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ ডিগ্রিতে। এ ছাড়া, এ মাসেই বঙ্গোপসাগরে দু’টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

যেমন যাবে জানুয়ারির আবহাওয়া

আবহাওয়ার মাসব্যাপী পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি জানুয়ারিতে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ মাসে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে দু’টি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর পাশাপাশি চলতি মাসেই দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে এক থেকে দু’টি মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা নামতে পারে। এ ছাড়া আর একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ওই সময় ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা নামতে পারে। এছাড়া তিনটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহেরও পূর্বাভাস রয়েছে। ওই সময় ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা নামতে পারে।

সামনের দিনগুলোতে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি/ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা/মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহণ ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

যেসব এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব পড়তে পারে

দেশের উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এর মধ্যে রয়েছে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা। ফলে উত্তরাঞ্চল ছাড়াও যশোর, চুয়াডাঙ্গা থেকে শুরু করে কুষ্টিয়া পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি থাকতে পারে। সেইসঙ্গে সিলেট বিভাগের কিছু অংশে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভব হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

শীতে বাড়তে পারে যেসব রোগ

শীত মৌসুমে সবচেয়ে দ্রুত দেখা দেয় ঠান্ডাজনিত রোগ। যেমন- জ্বর, ঠান্ডাজনিত এলার্জি, ধুলাবালিতে ডাস্ট এলার্জি। এ ছাড়া, দেখা দেয় শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা। চিকিৎকদের মতে, এ সময় শিশু ও বয়স্কদের কাঁশি, জ্বর ও এলার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক সময়ে শনাক্ত না করা গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতেও রূপ নিতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারনে টনসিল বেড়ে গিয়ে ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে।

কাশ্মীর থেকে আসছে ঠান্ডা বাতাস

আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের নিম্নমুখী অংশ উত্তর-পশ্চিম ভারতের হিমালয় পর্বতের কাশ্মীর এলাকা থেকে ঠান্ডা বাতাস বয়ে আসছে। এই হিমেল বাতাসের প্রবাহ ভারতের মধ্য ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো পেরিয়ে পূর্ব দিকে আসছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে তা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু হতে পারে। ফলে ওইদিন সকাল থেকে ফের দেশের ওপর দিয়ে কুয়াশাযুক্ত ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করবে।

৮ জানুয়ারির আবহাওয়া

বুধবার (৮ জানুয়ারি) ৯ টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এদিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। কিন্তু মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকত পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহণ এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে। এ সময় সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ও দিনের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবারও সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এদিনও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহণ ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে। তবে এদিন সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশের কোথাও কোথার দিনের বেলা শীতের অনুভূতি বিরাজমান থাকতে পারে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও শীত বেশি থাকবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমে যাবে। ওইদিনও সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। তবে বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা বলছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা যা বলছেন

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলছেন, ‘এখন শীতকাল। ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকেই মূলত শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। জানুয়ারিতে শীতের ঠান্ডা বাতাস আরও বাড়বে। সেইসঙ্গে বাড়তে পারে কুয়াশার ঘনত্ব। ফলে কুয়াশা ও শীত দুটোই আগামী কয়েকদিনে দ্রুত বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘এখন যে শীত শুরু হয়েছে তা এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।’

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

আবহাওয়া লঘুচাপ শৈত্যপ্রবাহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর