৫ আগস্টের পর ওএসডি, ফিরলেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৬ | আপডেট: ৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৬
যশোর: যশোর শিক্ষা বোর্ডের ৩৫তম চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক খন্দকার কামাল হাসান। সম্প্রতি ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হওয়া ৩৪তম বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তারের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে থাকার অভিযোগে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অধ্যাপক কামালকে ওএসডি করা হয়েছিল। এর আড়াই মাসের মধ্যেই যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে কাজে ফিরলেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে অধ্যাপক মর্জিনার কাছ থেকে দায়িত্বভার বুঝে নেন অধ্যাপক কামাল। বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অধ্যাপক মর্জিনা ও অধ্যাপক কামাল এবং তাদের আগেও যিনি এই বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন তারা তিনজনই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একই ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা। এটি নিছক কাকতালীয় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।
অধ্যাপক কামালের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়। পদার্থবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক ১৯৯৩ সালের নভেম্বরে প্রভাষক হিসেবে মেহেরপুর সরকারি কলেজে যোগ দেন। ১৯৯৪ সালের নভেম্বর মাসে তিনি বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে বদলি হন। ২০১১ সালে তিনি বগুড়ার গাবতলী সরকারি কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে হিসেবে নিয়োগ পান।
২০১৮ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান খন্দকার কামাল। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়ে মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজে যোগ দেন। সেখান থেকে বদলি হয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে সরকারি আজিজুল হক কলেজে অধ্যক্ষ হিসবে যোগ দেন। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান থাকায়২৪ অক্টোবর তাকে ওই পদ থেকে ওএসডি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে (মাউশিতে) সংযুক্ত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, আগের সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন অধ্যাপক কামাল। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন। এ কারণে ৫ আগস্টের পর ওএসডি হয়েছিলেন। তিনি আবার কী করে বোর্ড চেয়ারম্যান হয়ে কাজে ফিরলেন, তা বোধগম্য নয়।
এদিকে অধ্যাপক খন্দকার কামাল, সদ্য বিদায়ী বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার ও তার ঠিক আগে যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব তিনজনই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তারা তিনজনই আবার বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ১৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তাদের তিনজনের পর পর যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।
এসব বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করলে অধ্যাপক খন্দকার কামাল হাসান জানান, তিনি ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে যশোর বোর্ডেরি চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য তিনি কখনো আবেদন করেননি। তা সত্ত্বেও ৫ জানুয়ারি তাকে যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিপক্ষে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক কামাল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলাম না। বরং আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই সন্তান ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিল।
এদিকে মঙ্গলবার অধ্যাপক কামালের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করার সময় শিক্ষা বোর্ড সচিব অধ্যাপক আব্দুর রহিম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. আব্দুল মতিনসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। তারা এ সময় ফুলেল শুভেচ্ছা জানান চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার কামাল হাসানকে।
সারাবাংলা/এমপি