Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাস্তবায়নের শেষ প্রান্তে ৭ মেগা প্রকল্প, গড় অগ্রগতি ৯০%

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৫ | আপডেট: ৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০০:২৪

ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: একে একে বাস্তবায়নের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে বিগত সরকারের আমলে গৃহীত ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত ৭ মেগা প্রকল্প। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে প্রকল্পগুলোর শুরু থেকে সর্বশেষ গত নভেম্বর পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর গড় ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পগুলো হলো- মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প,পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মায়ানমারের নিকটে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প।

প্রকল্পগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো.মহিউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলো নিয়মিত মনিটরিং করে আইএমইডি। প্রতিমাসেই প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে এসব প্রকল্পের বিষয়ে একটি কংক্রিট সিদ্ধান্ত দরকার। কেননা এগুলো চলবে, না কি যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায়ই বন্ধ করা হবে- তার কোন সুনিদিষ্ট দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আগের মতো কোন বৈঠকও হচ্ছে না। তবে এসব প্রকল্পে যেহেতু সরকারের সর্বোচ্চ সংখ্যক অর্থ বিনিয়োগ করা আছে, সেহেতু অবহেলার সুযোগ নেই।’

মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি (নভেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত) 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটির শুরু থেকে গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় অক্টোবর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে রাশিয়ার ঋণ ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মেট্রোরেল: ইতোমধ্যেই মেট্রোরেল (বেশিরভাগ) উদ্বোধন হয়েছে। পুরো প্রকল্পও প্রায় শেষের পথে। মেট্রোরেল লাইন-৬ প্রকল্পের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে নির্ধারিত সময়ে জনগণের চলাচলের জন্য খুলে গেছে এ অংশটি। পরবর্তীতে মতিঝিল পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয়। এখন নিয়মিত উত্তরা-মতিঝিল ট্রেন চলাচল করছে। তবে কমলাপুর পর্যন্ত পুরো প্রকল্প শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটির আওতায় গত নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে সংশোধিত ব্যয়সহ মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ: এ প্রকল্পে গত নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। এছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে মোট ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ গত নভেম্বর পর্যন্ত ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল।

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প: এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ১৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গত নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত কার্যক্রম: মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম (১২টি প্রকল্পযুক্ত) প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৬৯৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ রয়েছে প্রায় ৪৯ হাজার কোটি টাকা। ২০১৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত নভেম্বর প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং সার্বিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ৪০ শতাংশ।

পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর : এ প্রকল্পটি ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি ৮৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। প্রকল্পের ভৗত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ২২ শতাংশ।

দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ: দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। গত নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্প