‘গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধের শক্তি আহত লীগে পরিণত হয়েছে’
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:২১ | আপডেট: ৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৮
ঢাকা: গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, জামিন অযোগ্য মামলায় আসামিদের জামিনে প্রমাণিত হলো, হামলায় রাঘববোয়ালদের সংশ্লিষ্টতা বা ইন্ধন ছিল। তারা আসামিদের জামিন করাতে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করেছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনের পক্ষে এবং আন্দোলন প্রতিরোধ করতে গিয়ে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধের শক্তি এখন আহত লীগে পরিণত হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসানের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও প্রোপাগান্ডার প্রতিক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত ফারুক হাসানকে দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ফারুক সে দিনের হামলার বর্ণনা দেন এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান বলেন, কেন এ হামলা? এ হামলার ইন্ধনদাতা কারা? শোনা যাচ্ছে, রাঘববোয়ালরা আসামিদের জামিন করাতে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করছে। তাই যদি হয়, তবে কীসের রাষ্ট্র সংস্কার, কীসের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা? আমাদের স্পষ্ট কথা, দোষীদের ছাড় দেওয়া চলবে না। গণঅভ্যুত্থানে দুই শ্রেণির মানুষ আহত হয়েছেন। আন্দোলনের পক্ষে এবং আন্দোলন প্রতিরোধ করতে গিয়ে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধের শক্তি এখন আহত লীগে পরিণত হয়েছে। এরা কখনো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জিম্মি করছে, কখনো আহত লীগের মধ্য থেকে উপদেষ্টা দাবি করছে, কখনো সড়ক অবরোধ করছে। প্রকৃত আহতরা হাসপাতালের বিছানায়। আর অপরাধীরা বিভিন্ন জায়গা কুকর্ম করছে।
যারা ফারুক হাসানের ওপর হামলা করেছে এরা হাসিনার প্রেতাত্মা। এদের কোনো ছাড় নেই, ক্ষমা নেই। যদি এরা জামিন পায়, তবে ধরে নেব, এটা কোনো ছোটখাটো বিষয় না। বড় উদ্দেশ্য নিয়ে ফারুক হাসানের ওপর হামলা করা হয়েছে। কেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না, কীভাবে ওবায়দুল কাদের পালিয়ে গেল? শেখ পরিবারের একজনও কেন আটক হলো না? এখনো শহিদ পরিবার ক্ষতিপূরণ পেল না, শহিদের তালিকা হলো না, কেন আহতরা সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। এ কথা বললে আজকাল মার খেতে হচ্ছে।
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমার ওপর যারা শহীদ মিনারে হামলা চালিয়েছে তারা কেউই আহত নন কিংবা শিক্ষার্থী নন, তারা পরিষ্কারভাবে সন্ত্রাসী। সরকার এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতেও গড়িমসি করছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে যে হামলাকারীদের সঙ্গে তাদের ভালো একটা কানেকশন আছে। তারা আমার কাছে লোক পাঠিয়েছিল আপস করার জন্য। কিন্তু আমি জানিয়েছি ভুলের ক্ষমা হয় অপরাধের কোনো ক্ষমা হয় না। আমি হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছি এ অবস্থায় তারা জামিন পেয়ে গেল? এই কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা? এ রাষ্ট্রের আদৌ সংস্কার হবে?
তিনি আরও বলেন, ২০২৪-এর কোনো যোদ্ধা অপরাধ করলেই কি ক্ষমা পাবে? তাহলে তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওবায়দুল নিষ্পাপ! সংবাদ সম্মেলন শেষে হতেই শোনা যায়, অপরাধীরা গ্রেফতারের ১১ ঘণ্টার মাথায় জামিন পেয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফারুকের ওপর হামলার মামলায় গ্রেফতার আসামিরা জামিন পেয়েছে। অথচ ফারুক এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। ৩৭৯, ৩২৬, ৩০৭ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হলেও বিচারবিভাগের ওপর প্রভাব খাটিয়ে জামিন নিয়েছে। এখন প্রমাণিত হলো- হামলায় রাঘববোয়ালদের সংশ্লিষ্টতা ও ইন্ধন ছিল। বিচারবিভাগ স্বাধীন হবে, এই রাষ্ট্রের পরিবর্তন এই সরকার করবে, এটা আমি আর বিশ্বাস করি না। রাষ্ট্র সংস্কারের নামে ক্ষমতার চেয়ারের স্বাদ নেওয়ার সময়সীমা এরা দীর্ঘায়িত করবে। এর বাইরে আর কোনো কিছু করতে পারবে না।
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমার ওপর যারা শহীদমিনারে হামলা চালিয়েছে তারা কেউই আহত নন কিংবা শিক্ষার্থী নন, তারা পরিষ্কারভাবে সন্ত্রাসী। সরকার এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতেও গড়িমসি করছে। এতেই বুঝা যাচ্ছে যে এই হামলাকারীদের সাথে তাদের ভালো একটা কানেকশন আছে। তারা আমার কাছে লোক পাঠিয়েছিল আপোষ করার জন্য, কিন্তু আমি জানিয়েছি ভূলের ক্ষমা হয় অপরাধের কোন ক্ষমা হয়না। কিন্তু আমি হাসপাতালে বিছানায় কাতরাচ্ছি, এই অবস্থায় তারা জামিন পেয়ে গেলো? এই কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা? এই রাষ্ট্রের আদৌও সংস্কার হবে?
সংবাদ সম্মেলনে গণঅভ্যুত্থানে আহত নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/ইআ
সারাবাংলা/এএইচএইচ/ইআ