‘সেগুন গাছের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে যাচ্ছে’
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:২১ | আপডেট: ৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪১
রাঙ্গামাটি: অবাধে সেগুন গাছ লাগানোর ফলে এবং বাঁশঝাড় কাটার কারণে সুবলং ঝরনাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য ঝিরি-ঝরনাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার।
তিনি বলেছেন, ঝিরি-ঝরনার পানি পাহাড়ের মানুষ ব্যবহার করে; এগুলাই হলো ওয়াটারশেড। পাহাড়ের এই ঝিরি-ঝরনা, ছড়াগুলো পাড়ার পথে নিয়ে যেত, আমাদের ট্রেডিশনের সঙ্গে এই ছড়াগুলো জড়িত। এগুলো আমাদের রক্ষা করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে আপনারা আর সেগুন গাছ লাগাইয়েন না, বাঁশ গাছ লাগান।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অ্যানেক্স হলরুমে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরও বলেন, সেগুন গাছে কোনো পাখি (বসে না) নেই, এই গাছের বড়-বড় পাতাও বিষাক্ত। অগাছাও জন্মায় না। কিন্তু সেগুন গাছের মূল্যবৃদ্ধি। এই সেগুন আমাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনেনি, অকল্যাণ নিয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে এখন আগের মতো আর বাঁশঝাড় নেই। কর্ণফুলী পেপার মিল (কেপিএম) শুরু হয়েছিল সাজেকের কাচালং, মাচালং এর বাঁশঝাড়কে দেখিয়ে, এখানে কাগজপত্র তৈরি করা হয়। এখন আর আগের মতো বাঁশ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারণত বাঙালিরা মাটি কেটে ঘর করে, পাহাড়িরা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর হবে। এখন এই ট্রেডিশনগুলা আধুনিকতার কারণে উঠে যাচ্ছে।
সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের উপর স্থানীয় সরকারের উদ্যোগ (লোকাল গভর্মেন্ট ইনিশিয়েটিভে অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-লজিক) প্রকল্পের জেলা কর্মকর্তা পলাশ খীসার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাং শাহজাহান, লজিক প্রজেক্টের মনিটরিং স্পেশালিস্ট টিএম সেলিম। আরও বক্তব্য দেন প্রজেক্টের ক্লাইমেট চেঞ্জের ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর আমেনা ইয়াসমিন, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটর শাকিলা ইসলাম, ইয়ুথ অর্গানাইজেশার পপি ডাক্তার, সুজাতা চাকমাসহ অনান্যরা।
সভায় জলবায়ু পরিবর্তনরোধে স্থানীয়ভাবে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে যুবাদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এর আগে, সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে একটি র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।
সারাবাংলা/ইআ