৯০ নাবিক-জেলেকে মুক্তি দিল ভারত, চট্টগ্রামে ফিরছেন সোমবার
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৬ | আপডেট: ৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণের সময় ভারতীয় কোস্টগার্ডের নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি দুই ট্রলারের ৭৮ নাবিক মুক্ত হয়েছেন। তাদের সঙ্গে মুক্তি পেয়েছেন আরেকটি মাছ ধরা নৌ যানের আরও ১২ জন জেলে। মুক্ত হওয়া মোট ৯০ জনকে সোমবার (৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এনে ট্রলার মালিক ও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বঙ্গোপসাগরে খুলনায় হিরণ পয়েন্ট এলাকায় আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমানায় ৯০ নাবিককে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড। তাদের নিয়ে রাতের মধ্যে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জাহাজ চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবে।
পূর্বাঞ্চলীয় কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট সাকিব মেহবুব সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভারত থেকে মোট ৯০ জন নাবিককে আমরা বুঝে পেয়েছি। তাদের আগামীকাল (সোমবার) বিকেল ৩টায় পতেঙ্গা কোস্টগার্ড স্টেশনে আনা হবে। সেখানে আইনী প্রক্রিয়া শেষে তাদের মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগরে খুলনায় হিরণ পয়েন্ট এলাকা থেকে ট্রলার দুটি ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা আটক করে নিয়ে যায়। অভিযোগ ছিল, তারা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় সীমানায় প্রবেশ করেছিল।
ট্রলারগুলো হল, এফভি লায়লা–২ ও এফবি মেঘনা–৫। এর মধ্যে এফভি লায়লা–২ এস আর ফিশিং নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন। এফভি মেঘনা–৫ চট্টগ্রামভিত্তিক সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেডের মালিকানাধীন।
সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সুমন সেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোস্টগার্ড থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, আমাদের দুই ট্রলারের ৭৮ জনসহ মোট ৯০ জন নাবিককে ভারত মুক্ত করে তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আগামীকাল (সোমবার) বিকেলে তাদের আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আমরা সেখানে নাবিকদের পরিবারের সদস্যদেরও আসতে বলেছি। সেখানে নৌ পুলিশের কিছু আইনগত বিষয় আছে। সেগুলো সম্পাদন শেষে আশা করছি, আমরা তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।’
সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, এফভি-মেঘনা ট্রলারটি গত বছরের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে মাছ আহরণের জন্য খুলনায় গিয়েছিল। সেটি ১৪ ডিসেম্বর ফিরে আসার কথা ছিল। ওই ট্রলারে ৩৭ জন নাবিক ছিলেন। অন্যদিকে ৪১ জন নাবিক নিয়ে এফভি লায়লা-২ ট্রলারটি চট্টগ্রাম থেকে রওনা করেছিল গত ২৭ নভেম্বর। সেটি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ফিরে আসার কথা ছিল।
ভারতীয় কোস্টগার্ড তাদের আটকের পর ট্রলারগুলোর মালিক কর্তৃপক্ষ এবং নাবিকদের স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ১০ ডিসেম্বর রাতে ভারতীয় কোস্টগার্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তিনটি ছবি প্রকাশ করে বলা হয়, ভারতীয় সমুদ্রসীমায় মৎস্য আহরণের অভিযোগে এক অভিযানে ট্রলার দু’টিসহ ৭৮ নাবিককে আটক করা হয়েছে। নাবিকসহ ট্রলার দুটি প্যারাদ্বীপের কাছে নেওয়া হয়েছে।
মুক্ত হওয়া ৯০ নাবিকের মধ্যে বাকি ১২ জন এফবি কৌশিক নামে একটি মাছ ধরা ট্রলারের জেলে। গত ১২ সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমার কাছে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে নৌ যানটি ডুবে গিয়েছিল। সেখানে থাকা ১২ বাংলাদেশী জেলেকে ভারতীয় ট্রলার উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাকদ্বীপে ভারতীয় কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল।
নাবিক ও জেলেদের সঙ্গে তিনটি মাছ ধরার নৌ যানও ভারতীয় কোস্টগার্ড হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।
সারাবাংলা/আরডি/এমপি
৭৮ নাবিক মুক্ত বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশি দুই ট্রলার ভারতীয় কোস্টগার্ড