দূষণের শীর্ষে ঢাকা, বায়ুমান ‘দুর্যোগপূর্ণ’
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪২ | আপডেট: ৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৫
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের শুরুতেই বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে রাজধানী ঢাকা। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য বলছে, তাদের নিয়মিত বায়ুমান সূচকে (একিউআই) ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের করাচি, ভিয়েতনামের হ্যানয়ের মতো শহরের তুলনায় ঢাকার বাতাসে দূষণ অনেক বেশি।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় একিউআই তথা বায়ুমান সূচকে ঢাকার বায়ুমান স্কোর ছিল ৪২৪, যা ‘দুর্যোগপূর্ণ’ মাত্রার দূষণ ধারণ করে। এই সময়ে আর কোনো শহরের বায়ুমান এত খারাপ ছিল না।
একিউআইয়ে এ সময় ৩২৪ বায়ুমান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ইরাকের বাগদাদ, ২৭৫ বায়ুমান নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল ভারতের কলকাতা। তালিকায় পরের স্থানগুলোতে ছিল যথাক্রমে পাকিস্তানের করাচি (বায়ুমান ২২৬), ভিয়েতনামের হ্যানয় (২১৯), মঙ্গোলিয়ার উলানবাটার (২১০) ও ভারতের দিল্লি (১৯৭)।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বায়ুমান শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ধরা হয় ‘স্বাস্থ্যকর’। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোরকে বিবেচনা করা হয় ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ এবং স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বিবেচনা করা হয়। আর স্কোর ৩০১ বা তার চেয়ে বেশি হলে তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বিবেচনা করা হয়।
কয়েক ধরনের দূষণের ওপর বায়ুমান নির্ধারণ করে থাকে আইকিউএয়ার। এর মধ্যে রয়েছে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০, যেগুলোর আকার ১০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে কম) ও অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম২.৫, যেগুলোর আকার ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়ে কম) উপস্থিতি। প্রতি ঘনমিটারে এসব ধূলিকণার কত মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন বা পিপিএম) বায়ুতে উপস্থিত, তা দিয়ে এর পরিমাপ করা হয়। এ ছাড়া নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড ও ওজোনের মানকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে জর্জরিত ঢাকা। সাধারণত শীতকালে বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে ঢাকার বাতাস, কিছুটা উন্নত হয় বর্ষাকালে। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমের প্রভাবে দূষণ ক্রমশ বেড়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ওপরের দিকেই থাকছে ঢাকা।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বলছে, অতিরিক্ত বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটি সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের ওপর বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যানসার ও শ্বসনতন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
সারাবাংলা/এনজে/টিআর