‘মার্চ ফর ইউনিটি’তে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার দাবি
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:২০ | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:০০
ঢাকা: জুলাই বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় গণ-জমায়েত মার্চ ফর ইউনিটি প্রোগ্রাম জনসমুদ্রে পরিণত হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকা। এ সময় বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনাকে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করাতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে রশির ব্যবস্থা আমরাই করে দিব। তবুও ফাঁসির মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলা মার্চ ফর ইউনিটির প্রোগ্রামে বক্তারা এসব দাবি তোলেন। বক্তাদের দাবির সঙ্গে উপস্থিত জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া জনতাও একাত্বতা ঘোষণা করেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে এই গণহত্যার বিচার চাই। আমরা পাচার অর্থ ফেরত চাই, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ চাই এবং আহত যোদ্ধাদের সুচিকিৎসা চাই। সরকারকে আহ্বান জানাতে চাই, আমাদের দেশ সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে যাবে। কিন্তু সেই সুযোগে যদি কেউ আমাদের মাথায় ওঠে বসতে চায়, তাদের আমরা মাথা থেকে ফেলে দিতে হবে।’
সমাবেশে যোগ দিতে আসা গাড়িবহরে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জে কীভাবে আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপরে হামলা হয়? প্রশাসন কী করে? যদি কেউ সচিবালয়ে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে সেই ষড়যন্ত্রকে সমূলে উৎখাত করতে হবে।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সবচেয়ে বড় সমাবেশ ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে। ছাত্র-জনতার ঢল নামে সেখানে। জুলাই আন্দোলনে হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন তারা।
বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ শুরু হয়। শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি সম্বলিত বিভিন্ন স্লোগান ব্যানারে লিখেছেন তারা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ছাত্র-জনতা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে কেন্দীয় শহিদ মিনারে সমবেত হন।
রংপুর থেকে আসা আব্দুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার হাত ধরে চব্বিশে আমরা নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে। আজ বিপ্লবীদের মিলনমেলা। আমরা একতাবদ্ধ এটা প্রমাণ করতেই শহিদ মিনারে হাজির হয়েছি। ছাত্র-জনতার হাত ধরে আসা এই স্বাধীনতার মাধ্যমে দেশটাকে নতুন করে গড়তে চাই।’
অভ্যুত্থানে নিহত শহিদ শাহরিয়ারের বাবা মো. আবুল হাসানের বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে মিরপুর ১০ নম্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আমাদের এখানে অনেক শহিদ পরিবার আছে এবং আহতদের পরিবারও আছে। আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ত। খুনি হাসিনা পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। খুনি হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদসহ হেলমেট বাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আমি চাই এই খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হোক। আমরা কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। যদি এই খুনিদের বিচার না করা হয় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। আমাদের রাস্তায় নামাবেন না। আমরা চাই আমাদের সন্তান হত্যার বিচার করুন।’
সারাবাংলা/ইউজে/ এইচআই