দরিদ্র সবাইকে টিসিবি কার্ড দেওয়া সম্ভব নয়: বাণিজ্য উপদেষ্টা
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:২৫ | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:২৮
রাজশাহী: সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে দরিদ্র সবাইকে টিসিবি কার্ড দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত উপযুক্ত উপকারভোগী নির্বাচন করে টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। সুবিধাভোগীদের নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা আনতে হবে।’
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে টিসিবির কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় অংশীজনের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রকৃতপক্ষে যারা টিসিবি কার্ড পাওয়ার যোগ্য তাদেরকেই দেওয়ার ব্যবস্থা করে সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের টার্গেট হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে কিছুটা স্বস্তি পৌঁছে দেওয়া। রাজশাহী জেলায় এক লাখ জনগোষ্ঠীকে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য কেনার কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মধ্যে অন্ততএক কোটি প্রকৃত দরিদ্র জনগণকে আমরা এর আওতায় আনতে চাই।’
উপদেষ্টা বলেন, টিসিবির কার্ড বিতরণে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ফলে সঠিকতায় যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। সঠিক লোকের কাছে পৌঁছায়নি। অবশ্যই এখানে অনেক বেশি ব্যত্যয় ছিল। দেশের প্রায় এক কোটি লোককে নিয়ে টিসিবি কার্যক্রম চলছে। আমরা প্রথম ধাপে শৃঙ্খলাবন্ধ করার জন্য ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করেছি। ৫৭ লাখ এবং পরে আমরা আরও ছয় লাখ বর্ধিত করে ৬৩ লাখ কার্ড তৈরি করেছি।
তিনি বলে, আমি ব্যক্তিগতভাবে এসেছিলাম বিভিন্ন উপকার ভোগীর বাড়ি ঘুরে দেখে বোঝার জন্য। উপকার ভোগী যে সিলেকশন টা ছিল সেটা সঠিক ছিল কি-না? এখানে কোন ব্যত্যয় আছে কি-না। ব্যত্যয়গুলো বোঝার চেষ্টা করেছি। সে অনুয়ায়ী যে সংশোধনগুলো আনা দরকার, সে সংশোধনগুলো বোঝার জন্য রাজশাহী অঞ্চলে প্রাথমিক ভিজিট।
তিনি আরও বলেন, টিসিবির কার্ড এবং পণ্য প্রকৃত মানুষের হাতে নায্যমূল্যে তুলে দিতে পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। একইসঙ্গে বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে, শুধু রমজান নয় কোরবানি পর্যন্ত বাজারে পণ্যের সরবরাহ এবং ঘাটতির সমতা রাখার চিন্তা করছেন। দেশে চালের কোন ঘাটতি নাই। সরবরাহে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটিও ঠিক করে ফেলা হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, রাজশাহীতে সংক্ষিপ্ত ভিজিটে এসেছি। পরবর্তিতে বাংলাদের আরও বিভিন্ন অঞ্চলে যাব। গিয়ে আমার প্রয়োজনীয় যে সংশোধনী সেটা উপলব্ধি করে আমরা সংশোধনের চেষ্টা করব। ডিলার ও স্টেক হোলডার জন্য কি ম্যাসেস ছিল? এমন কথার উত্তরে তিনি বলেন, ডিলারদের কাছে ম্যাসেস ছিল ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। প্রকৃত যারা উপকার ভোগী। প্রান্তিক জনগোষ্টি যারা এই টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে পণ্য পাওয়ার জন্য উপযুক্ত তাদের কাছে পৌঁছানো।
এতোদিন কি সঠিক মানুষের কাছে কার্ড পৌঁছায়নি? এমন কথার উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, অবশ্যই এখানে অনেক বেশি ব্যত্যয় ছিল। এতো দিন পর্যন্ত যে বিভিন্ন রকমের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ফলে সঠিকতায় যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। আমরা এই ঘাটতিটাকে সঠিকত্যে আনার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’
সার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার জানা তথ্য অনুযায়ী দেশে সারের কোন ঘাটতি নেই। মজুত পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো। আমি ক্রয় কমিটির মিটিংয়ে যেটা দেখেছি সেখান থেকে আমার কাছে মনে হয় যে কোন ধরনের ঘাটতি নেই।’
জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে সভায় টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলমগীর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল, রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলার পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামসহ অনান্য উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইআ