Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদ্যুৎ খাতের দক্ষতা বাড়ানোর প্রকল্পে ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয় কমছে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:২৮

ঢাকা: কাজের একাধিক অঙ্গ বাতিলের কারণে বিদুৎ খাতের দক্ষতা বাড়াতে গৃহীত প্রকল্পের ব্যয় কমছে। তবে ব্যয় কমলেও প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ছে। এ ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিও ধীর। গত আট বছরে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির একটি প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

জানা যায়, পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম একটি সঞ্চালন ব্যবস্থা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নির্ভরযোগ্যতা ও দক্ষতা বাড়াতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম রিল্যায়েবিলিটি অ্যান্ড এফিশিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৯৭ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪৩০ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অবশিষ্ট ব্যয়ের মধ্যে ৯২ কোটি ৪৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা দেবে সরকার এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ৫৭ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্পের প্যাকেজ-২ এবং প্যাকেজ-৩ এর লট-৪ এর কার্যক্রম বাতিলসহ কিছু অঙ্গের কাজে সংযোজন-বিয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে প্রকল্পের ব্যয় ২৭৭ কোটি ৮৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা কমে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩০২ কোটি ১২ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রকল্প ব্যয় কমছে প্রায় ৪৮ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের প্যাকেজ-২ এর কার্যক্রম বাতিলের বিষয়ে প্রস্তাবে বলা হয়েছে,  এ প্যাকেজের আওতাধীন ইনস্টলেশন অব ডিএলআর ডিভাইস প্রকল্পের পরামর্শকের সুপারিশ অনুযায়ী এবং পিআইসি ও পিএসসি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি বাদ দেওয়া হয়েছে।

আর প্রকল্পের প্যাকেজ-৩ লট ৪ এর আওতাধীন টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড আরটিইউ সিস্টেম আপগ্রেডেশন কাজটি প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও পাওয়ার গ্রিডের পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া পাওয়ার গ্রিডের পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্তে কাজের ধরণ অনুযায়ী প্রকল্পের প্যাকেজ-৩কে পাঁচটি লটে ভাগ করা হয়েছে, যা আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় বাড়া বা কমার বিষয়ে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক স্থাপনা খাতে ৩৮ কোটি ৬২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম খাতে ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা, মোটরযান বীমা খাতে ৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং রেজিস্ট্রেশন ফি খাতে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয় ব্যয় বাড়ছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার পরিবর্তনের কারণে সংশ্লিষ্ট খাতে প্রকল্প ব্যয় ৫১ দশমিক ৩২ শতাংশ বাড়ছে।

অন্যদিকে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম খাতে ২১৩ কোটি ৬ লাখ টাকা, সিডিভ্যাট বাবদ ৩২ কোটি ২৪ লাখ টাকা, প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা এবং ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতে ৯ কোটি ৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকাসহ কিছু অঙ্গে ব্যয় কমছে।

প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাবে বলা হয়েছে,  প্রকল্পের সার্ভিস প্যাকেজের অধীন নিয়োগ করা আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিটি আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভেটিং ও চুক্তিমূল্যের ১০ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধ সংক্রান্ত জটিলতায় ৩০ মাস বিলম্বে কার্যকর হয়। এছাড়া প্রকল্পের প্যাকেজ-৩ এর অধীন কাজগুলো পরামর্শকের সিস্টেম স্ট্যাডির উর নির্ভরশীল হওয়ায় এ প্যাকেজের চুক্তিগুলো শেষ করতে বিলম্ব হয়। ফলে এই প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় প্রয়োজন। এসব কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

বিদ্যুৎ খাত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর