কলেজের গেট আছে, রাস্তা নাই
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:১৭ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:২৫
নওগাঁ: জেলার রাণীনগরের শের-এ বাংলা সরকারি মহাবিদ্যালয়ের মাঠের এক পাশে শুধু গেট আছে কিন্তু নেই চলাচলের রাস্তা। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই লাখ টাকা খরচে নির্মাণ করা গেট বর্তমানে কোনো কাজেই আসছে না। শুধুমাত্র আর্বজনা স্তুপের পাশে নামফলকসহ দাঁড়িয়ে আছে গেটটি। এমন স্বেচ্ছাচারিতা কর্মে হতবাক স্থানীয়রা। এছাড়া কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় কলেজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মর্মে একাধিক অভিযোগও পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সাবেক এমপি আনোয়ার হোসেন হেলাল কলেজ পরিদর্শনে এসে একটি প্রধান গেট নির্মাণের জন্য প্রায় তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। জেলা পরিষদের মাধ্যমে সেই অর্থছাড়ে বিলম্ব হওয়ার কারণে চলতি বছরের শুরুর দিকে সেই অর্থ পেলে কলেজের অধ্যক্ষ সেই অর্থ দিয়ে কলেজ মাঠের পশ্চিম দিকে রাস্তা বিহীন একটি গেট নির্মাণ করেন। যে গেট দিয়ে চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। কলেজের পাশ দিয়ে দীর্ঘদিনের চলাচলের পাকা রাস্তা থাকতে যেখানে চলাচলের রাস্তা নেই সেখানে কিভাবে কোনো পরিকল্পনায় লাখ টাকা খরচ করে গেট নির্মাণ করা হয় সেই প্রশ্ন স্থানীয়দের।
রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মিন্টু আলী বলেন, ‘শুধুমাত্র কলেজের শিক্ষার্থীসহ অন্য স্টাফদের চলাচলের জন্য যদি ওই গেট নির্মাণ করা হয় তাহলে গেট নির্মাণের আগেই পুরোপুরি চলাচলের জন্য রাস্তার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। আর যেখানে কলেজের প্রাচীর নেই সেখানে লাখ টাকা খরচ করে এমন গেট নির্মাণ করা সত্যিই পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন কাজেই প্রমাণ পাওয়া যায় যে এই কলেজে কি পরিমাণ অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতা করা হয়।’
কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, কলেজ মাঠের দক্ষিণের অংশ প্রায় সারা বছরই পানিতে ডুবে থাকে যার কারণে মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বড় ধরনের কোনো টুর্নামেন্টের আয়োজন করা যায় না। সেই জরুরি মাঠটি মাটি ভরাট করে মেরামত না করে মস্তকবিহীন একটি গেট নির্মাণ করে লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
কলেজের অধ্যক্ষ মোছা. শাহানাজ পারভীন মুঠোফোনে জানান, গেট নির্মাণ করেছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের আওতায় অর্থ বরাদ্দ হওয়ার কারণে গেট নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সবকিছুই করেছে জেলা পরিষদ। আমি একাধিকবার গেট নির্মাণের বিষয়ে বাধা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। আর পরবর্তী সময়ে কলেজের সীমানা প্রাচীর এবং নতুন ভবন নির্মাণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হয়তো বা সেই পরিকল্পনা মাফিক গেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে গেট নির্মাণে অনেক ভুলও করা হয়েছে।
আর স্বেচ্ছাচারিতা বিষয়ে তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কলেজের সকল শিক্ষকদের পরামর্শক্রমেই সকল কাজ করা হচ্ছে। সে সকল শিক্ষকরা আমাকে সহ্য করতে পারছেন না তারাই মূলত বিভিন্ন স্থানে মিথ্যে রটনা রটিয়ে যাচ্ছেন।
কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন জানান, কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে তিনি একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন। সেই সব অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাবাংলা/এইচআই