Sunday 05 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সচিবালয়ে আগুন: নাশকতার আশঙ্কা প্রশাসনের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৮ | আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৪৯

বুধবার মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুন লেগে ৭ নম্বর ভবনের একাধিক ফ্লোর পুড়ে যায়।

ঢাকা: প্রশাসনের কেন্দ্র বিন্দু সচিবালয়। যেখানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে সব সময়। রাতেও শতাধিক নিরাপত্তা কর্মী ডিউটিতে থাকেন। তারা বলছেন, ছুটির দিন ও রাতে ভবনগুলোতে কেউ থাকে না। এ খালি ভবনে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হলো- তা খুঁজছেন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কর্মকর্তারা। তবে এরই মধ্যে পরিকল্পিত ভাবে কেউ হয়তো আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে- এমন ধারণা করছেন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সিনিয়র চিফ পেডি অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম। একই কথা বলা হচ্ছে অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও। যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনো গণমাধ্যমে কেউ দেন নি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নৌ বাহিনীর ওই কর্মকর্তা বলেন, ভিতরের পরিস্থিতি দেখে ধারণা করছি যে, কোন শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে নি। এখানে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে আগুনটা লেগেছে। যদি শটসার্কিট থেকে আগুন লাগতো, তাহলে নানান স্থানে আগুন লাগতো না। কে, কারা বা কীভাবে আগুন লাগলো- সেটার সঠিক তথ্য এখনও জানি না। প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয়, কেউ পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করেছে।

বিজ্ঞাপন

পরবর্তীতে ডাক টেলিযোগাযোগ, গণপূর্ত, সমাজকল্যাণ, পরিবেশ, বাণিজ্য, শ্রম ও স্বরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন করেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও।

বুধবার মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুন লেগে ৭ নম্বর ভবনের একাধিক ফ্লোর পুড়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, আপাতদৃষ্টিতে তো নাশকতা মনে হচ্ছে। যেহেতু তদন্ত টিম গঠন হয়েছে। এখন অধিকতর তদন্তের পর ঘটনার কারণ জানা যাবে।

প্রসঙ্গত সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনটিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাংশ, অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ চারটি তলায় আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ছাঁই হয়ে যাওয়া চারটি ফ্লোরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ছিল। চারটি ফ্লোরই একেবারে পুড়ে গিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একাংশ পুড়ে গেছে। পুড়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়েরও কিছু অংশ। বেঁচে যাওয়া রুমগুলোতে অসংখ্য কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে। ভবনটির নিচে পড়ে আছে মরা কবুতর। এদিকে ছয় ঘন্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলা হলেও কার্যত প্রায় দশ ঘন্টা লেগেছে আগুন পুরোপুরি নেভাতে।

বুধবার মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুন লেগে ৭ নম্বর ভবনের একাধিক ফ্লোর পুড়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, আগুন নেভাতে গিয়ে তাদের পদে পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছে। সচিবালয়ের দরজা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের দুটি টার্নটেবল লেডার (টিটিএল) ভেতরে ঢুকতে পেরেছে। যদি আরও বেশি টিটিএল ঢুকতে পারত, তাহলে আরও আগে আগুন নেভানো সম্ভব হতো। আর ভবনের ভেতরের জায়গাও অনেক সরু। যে কারণে পানির সংযোগ দিতে দেরি হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে রাত ১টা ৫৪ মিনিট থেকে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে একে একে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮টি ইউনিট কাজ করলেও পরে আরও ১১টি ইউনিট যুক্ত হয়। সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। যা ৬ ঘন্টা পর নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

সারাবাংলা/জেআর/আরএস

নাশকতা সচিবালয়ে আগুন

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর