Saturday 28 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেতন-ভাতা না পাওয়ায় ক্ষোভ, লস্করের হাতেই ৭ খুন: র‍্যাব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২৯ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৪

গ্রেফতার আকাশ মন্ডল ইরফান (২৬)।

বাগেরহাট: চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল-বাখেরা জাহাজে আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় জাহাজের লস্কর আকাশ মন্ডল ইরফান একাই জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন (র‌্যাব)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান জানিয়েছেন, বেতন-বোনাস ঠিকমতো না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে চেতনানাশক খাইয়ে সাতজনকে খুন করেন তিনি। এ কাজে তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে র‌্যাব-৬-এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাটের চিতলমারি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আকাশ মন্ডল ইরফানকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছে একটি হ্যান্ড গ্লাভস, একটি লোটো ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, নিহতদের ব্যবহৃত পাঁচটি ও তার ব্যবহৃত দুটিসহ মোট সাতটি মোবাইল এবং রক্তমাখা নীল রঙের একটি জিন্স প্যান্ট পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার আকাশ মন্ডল ইরফান (২৬) বাগেরহাটের ফকিরহাট গ্রামের জগদীশ মন্ডলের ছেলে। এমভি আল-বাখেরা জাহাজে আট মাস আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

র‍্যাব কর্মকর্তা মেজর সাকিব বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ জানিয়েছেন, ওই জাহাজের কর্মচারীরা বেতন-বোনাসসহ কোনো বিল পান না। জাহাজের মাস্টার একাই সবকিছু ভোগ করতেন। এ নিয়ে জাহাজের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকেই আকাশ জাহাজের মাস্টারসহ কয়েকজনকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আকাশ গত ১৮ ডিসেম্বর তিন পাতা ঘুমের ওষধ কিনে নিজের কাছে রেখে দেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় জাহাজে রাতের খাবারের তরকারির মধ্যে তিন পাতার ৩০টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী আকাশ রাত সাড়ে ৩টার দিকে প্রথমে মাস্টারকে জাহাজে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে একে একে বাকি ছয়জনকেও খুন করেন তিনি। এ ঘটনার সঙ্গে আকাশ একাই জড়িত বলে আমাদের জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

আকাশের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান মেজর সাকিব। বলেন, তাকে থানায় সোপর্দ করা এবং আদালতে উপস্থাপন করার কাজগুলো বিধি অনুযায়ী করা হবে।

এর আগে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) চাঁদপুরে হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ ও তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই তিনজনের মধ্যে দুজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। একমাত্র জীবিত জুয়েল রানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জুয়েল ওই জাহাজে সুকানি হিসেবে কাজ করেন। তার শ্বাসনালী কেটে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে জাহাজ মালিকের পক্ষে মো. মাহবুব মোরশেদ বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলা করেন। চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগ এনে অজ্ঞাত আট থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়

সারাবাংলা/এমপি/টিআর

ক্ষোভ বেতন-ভাতা লস্করের হাতে ৭ খুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর