Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কালই বাড়ি যাচ্ছে মুক্তামনি


২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৭:০১ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৮:১৫

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

আগামীকাল ২২ ডিসেম্বর বাড়ি যাচ্ছে মুক্তামনি। গত ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসকেরা মুক্তামনিকে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত দেন। তবে নিজেদের প্রস্তুতির জন্য এ কয়দিন তারা সময় নেন বলে সারাবাংলাকে জানান মুক্তামনির বাবা ইবরাহিম হোসেন। আজ তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এদিকে, ঢামেক হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সারাবাংলাকে জানান, মুক্তামনি শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে। আশা করছি, বাড়ি গেলেও তার কোনও অসুবিধা হবে না।

বিজ্ঞাপন

চিকিৎসকরা তাদের একমাস পরে আবার হাসপাতালে আসার জন্য বলেছে।

এদিকে, ঢামেক হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সারাবাংলাকে জানান, মুক্তামনি শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে। আশা করছি, বাড়ি গেলেও তার কোনো অসুবিধা হবে না।

আজ মুক্তামনির বাবা ইবরাহিম হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, আমরা আগামীকাল ভোর ছয়টার দিকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।

ইবরাহিম হোসেন বলেন, আমার আম্মুজানের (মুক্তামনি) হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসকরা বলছেন, এতে করে মেয়েটার হাতের ফোলাভাব ধীরে ধীরে কমে আসবে।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, মুক্তামনি বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ছিল। আমরাও বুঝতে পারছিলাম, ছোট এ মেয়েটি গত কয়েকমাস ধরেই হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি থেকে তার একঘেঁয়েমি চলে এসছে। তার ওপর কত কত অস্ত্রোপচার, ওষুধ-কত কিছু হল মেয়েটার সঙ্গে। একটু বাড়ি থেকে ঘুরে এলে তার মনটা ভালো হবে।

চলতি বছরের ১০ জুলাই রাতে রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামনিকে নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে আসেন বাবা ইবরাহিম হোসেন ও আসমা খাতুন। সেদিনই মুক্তাকে হাপসাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।

বিজ্ঞাপন

১১ বছরের মুক্তামনির জন্মের দেড় বছর পর থেকেই ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের অংশে চামড়ার নিচে গোটার মতো হয়। তারপর থেকেই সেটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। একসময় পুরো ডান হাত মুক্তামনির শরীরের চেয়ে ভারি হয়ে যায়। ঘায়ের মতো পুরো হাতে ঘুরে বেড়াত পোকা।

ইবরাহিম হোসেন তার মেয়ের এ অবস্থার জন্য শুরুর দিকে যাওয়া চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করেন। হাতের ক্ষতস্থানের ব্যথা ও যন্ত্রণায় মুক্তামনির স্বাভাবিক জীবনও ছিল যন্ত্রণাদায়ক।

ঢামেক হাসপাতলে ভর্তির পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা মুক্তামনির রোগটিকে হেমানজিওমা বলে উল্লেখ করেন। চিকিৎসকরা জানান, এটি একটি জন্মগত রোগ (কনজিনেটাল ডিজিস)। তবে এই রোগের বিশেষত্ব হলো, কারও ক্ষেত্রে এটি জন্মের পরপরই প্রকাশ পেলেও কারও ক্ষেত্রে প্রকাশ পায় না।

মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য ঢামেক বার্ন ইউনিট থেকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সিঙ্গাপুরের হাসপাতাল মুক্তার চিকিৎসা করতে ডিনাই করে। এরপর গত ৫ আগস্ট মুক্তামনির হাতে প্রথম অস্ত্রোপচার করেন একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। সেখানে তারা মুক্তার হাতটি অক্ষত রেখেই হাতের প্রায় সাড়ে তিনকেজি অতিরিক্ত মাংসপিন্ড চিকিৎসকরা ফেলে দিতে সক্ষম হন এবং কয়েকটি অস্ত্রোপচার করেন। পরে পায়ের উরু থেকে চামড়া এনে হাতে স্কিন গ্রাফটিং করেন তারা।

তবে মুক্তামনির আরও চিকিৎসা প্রয়োজন উল্লেখ করে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আপাতত ওকে আমরা বাড়ি যাবার অনুমতি দিয়েছি, বাড়ি থেকে ফিরে এলে পুনরায় ওর চিকিৎসা শুরু করব আমরা।

সারাবাংলা/জেএ/এমএ

মুক্তামনি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর